সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শহিদ নূর হোসেন তুমি কার?



‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক।' আজকের দিনে ১৯৮৭ সালে বিরোধী দলের 
অবরোধ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ঢাকায় একটি মিছিলে নূর হোসেন অংশ নেন এবং প্রতিবাদ হিসেবে বুকে পিঠে সাদা রঙে লিখিয়ে নেন
উপরের স্লোগানটি। মিছিলটি ঢাকার গুলিস্তানের জিপিও-র সামনে জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি আসলে স্বৈরশাসকের মদদপুষ্ট পুলিশবাহিনীর গুলিতে নূর হোসেন নিহত হন। মোট তিনজন আন্দোলনকারী সেদিন নিহত হন। এসময় বহু আন্দোলনকারীও আহত হন। নিহত অপর দুই ব্যক্তি হলেন যুবলীগ নেতা নুরুল হূদা বাবুল এবং আমিনুল হূদা টিটু। নূর হোসেনরা সব সময় জন্ম গ্রহণ করেন না। জাতির দুর্দিনে প্রয়োজনে দুঃসময়ে তারা অবতারের মতো অবতীর্ণ হন  জাতির ত্রাণকর্তা হিসেবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্বে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতনে যেমন দুজন বাংলার দামাল ছেলে অনন্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। তেমনি স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ক্ষমতার মসনদে জেকে বসা স্বৈরশাসক এরশাদের পতনে দুজন সূর্য সন্তানের শাহাদাত এরশাদের পতন ত্বরান্বিত করেছিল।আমরা ইতিহাস থেকে জানি পাকিস্তান আমলে শহিদ আসাদ তিনি আইয়ুব খানের পতনের দাবীতে মিছিল করার সময় ২০ জানুয়ারি ১৯৬৯ সালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। শহীদ আসাদ হচ্ছেন ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনে একজন পথিকৃৎ। ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান আমলে আইয়ুব বিরোধী  গণআন্দোলনে শহীদ হন মতিউর রহমান। ১৯৬৯ সালের  ২৪ জানুয়ারি ঢাকায় পুনরায় মিছিল বের হলে সেদিন পুলিশের গুলিতে নিহত হন মতিউর রহমান। এ দুটো হত্যাকান্ড এক দশকের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিদায় নিতে বাধ্য করে।পাকিস্তান আমলে পর স্বাধীন বাংলাদেশে  দুটো ঘটনায় যেন  ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছিল। উরুগুয়ের সাংবাদিক এদুয়ারদো গালিয়ানো বলেছিলেন, 'ইতিহাস বিদায় বলে না, বলে পরবর্তীতে দেখা হবে।' এইচএম এরশাদ ১৯৮২ সালে একটি সেনা অভ্যুত্থানের  মধ্যদিয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি প্রহসনের একটি নির্বাচন দেন।  নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেন, কিন্তু বিরোধী দলগুলো তার এই নির্বাচনকে জালিয়াতির নির্বাচন বলে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে। তাদের একমাত্র দাবী ছিল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা। এই দাবিতে দেশের দুটি রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগস্বৈরশাসক এরশাদের পতনের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৫-দলীয় ঐক্যজোটের মিছিলে পুলিশের গুলিতে নূর হোসেন নিহত হন। এরপর ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে নভেম্বর স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনের সময় তৎকালীন স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীদের গুলিতে ডা: শামসুল আলম খান মিলন নিহত হন। ডা. মিলনের নিহতের মধ্য দিয়ে তখনকার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয়। এবং অল্প কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এরশাদ সরকারের পতন ঘটে।এদিকে নূর হোসেন হত্যাকান্ডের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ বিরোধী দলগুলো ১১ ও ১২ই নভেম্বর সারা দেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল ঘোষণা করে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন, ফলে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন আরোও ত্বরান্বিত হয়। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর জেনারেল এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হন। এর মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটে গণতন্ত্র পুণ-প্রতিষ্ঠিত হয়।এরশাদ পদত্যাগ করলে পরবর্তীতে বাংলাদেশে দুটি হ্যাঁ-না ভোটের মধ্য দিয়ে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা চালু হয়।১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, এতে বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এর এক বছর পর সরকারের পক্ষ থেকে নূর হোসেন'র মৃত্যুর দিনটি সরকারিভাবে উদযাপনে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। দিনটিকে প্রথমে ঐতিহাসিক ১০ই নভেম্বর দিবস হিসেবে পালন করা হলেও আওয়ামী লীগ এটিকে শহীদ নূর হোসেন দিবস করার জন্য সমর্থন প্রদান করে এবং এই নামে দিবসটি এখনো পালন হয়ে আসছে।এতক্ষণ আমরা পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলে দুজন স্বৈরশাসকের বিদায়ে চারজন অকুতোভয় দামাল সন্তানের ভূমিকা আলোচনা করলাম। এসব অতি সাধারণ আলোচনা মনে করি। সাদামাটা কথা। আজকে নূর হোসেন দিবস হেতু  কিছু কথা বলা প্রয়োজন। নূর হোসেন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এক জীবন উৎসর্গকারী বীর। তাঁর আত্মত্যাগের  মূল্যায়ন কি আমরা করতে পেরেছি? নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার নামে স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতি বছরের ১০ই নভেম্বর বাংলাদেশে নূর হোসেন দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এছাড়া তিনি যে স্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত হন, তার নামানুসারে সেই গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টের নামকরণ করা হয়েছে নূর হোসেন চত্বর। এতোটুকু কি যথেষ্ট? নূর হোসেন ১০ই নভেম্বর তাঁর নিহত হবার ১০ মিনিট পূর্বে  তোলা গায়ে লেখাযুক্ত আন্দোলনরত অবস্থায় ছবিটি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক হয়ে উঠেছে। নূর হোসেন যে উদ্দেশ্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তা সাময়িক সময়ের জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করলেও বর্তমান সময়ে তাঁর আত্মত্যাগের শিক্ষা যেন ইতিহাসে ঠাঁই করে নিতে পারেনি। বরং নূর হোসেনের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো তার আত্মত্যাগকে ক্ষমতা আরোহণের সোপান হিসেবে ব্যবহার করেছে। নূর হোসেন স্বৈরশাসক এরশাদের লেলিয়ে দেওয়া পেটুয়া বাহিনীর গুলিতে নিহত হলেও আওয়ামীলীগ নিজের কর্মী নূর হোসেনের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকা করে শুধু ক্ষমতার মোহে   এরশাদের জাতীয় পার্টির সাথে একত্রে মহাজোট গঠন করে।শুধু তাই নয় আওয়ামীলীগ এরশাদকে নিয়ে সরকার গঠন করে একজন পতিত স্বৈরশাসককে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছে। সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় কি জানেন? ১০ নভেম্বরকে এরশাদের জাতীয় পার্টি গণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করে।জাতির সঙ্গে এর চেয়ে বড় তামাশা আর কি হতে পারে? 
২০১২ সালে এরশাদ অভিযোগ করেন বিরোধী দলগুলো নূর হোসেনকে তার সরকার বিরোধী একটি প্রতীকে রুপান্তরিত করেছে। তিনি বলেন,
"আপনারা (বিরোধী দল) আমাকে সরাতে লাশ নিয়ে এসেছিলেন, কারণ আন্দোলনকে চাঙ্গা করতে এটা দরকার ছিল।" একথা শুনতে গা ঘিনঘিন করার মতো অবস্থা। এদেশে লাশ নিয়ে কম রাজনীতি হয়নি হচ্ছে না। 
বাস্তবে কি দেখছি নূর হোসেনদের লাশের ওপর রাজনীতি করেই তো আমোদ ফুর্তি করা হচ্ছে। নূর হোসেনরা হৃদয় দিয়ে যা বিশ্বাস করেন তা লালন করে জীবন সঁপিয়ে দেন। সুবিধা লোভীরা তা লুফে নেয়।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ই নভেম্বরের স্মৃতিচারন করে বলেন,সেদিন আমরা যখন মিছিল শুরু করছিলাম তখন নূর হোসেন আমার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। আমি তাঁকে কাছে ডাকলাম এবং বললাম তাঁর গায়ের এই লেখাগুলোর কারণে তাকে পুলিশ গুলি করবে। তখন সে তার মাথা আমার গাড়ির জানালার কাছে এনে বলল, "আপা আপনি আমাকে দোয়া করুন, আমি গণতন্ত্র রক্ষায় আমার জীবন দিতে প্রস্তুত। 'শেষ কথা রাজনীতির শেষ কথা বলে কিছু নেই। হোক না সে স্বৈরাচার, দেশবিরোধী কিংবা রাজাকার তাদের সঙ্গে জোট বাঁধো।তাদের খুব বেশি প্রয়োজন ক্ষমতার মিষ্টি স্বাদ। নূর হোসেনরা কোনো রাজনৈতিক দলের হতে পারেন কিন্তু বেঁচে থাকবেন এদেশের প্রতিটি মানুষের অন্তরে সত্যের প্রতীক হয়ে, জাতির সূর্য সন্তান হিসেবে।রাজনৈতিক দলগুলো নূর হোসেনদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করতে পারে কিন্তু দেশবাসী করবে না। আজ আরও নূরের মতো সাহসী সত্যের নিশানবাহী অকুতোভয় বীর সন্তান প্রয়োজন যিনি কিনা আমাদের অন্ধকার হতে আলোর বন্দরে পৌঁছে দেবেন।নূরলদীনের সারাজীবন’নাটকে প্রতিবাদী নূরলদীন যখন হাঁক দিয়ে যান,
‘জাগো বাহে কোনঠে সবায়’।
ঘুমিয়ে পড়া বা ঝিমিয়ে পড়া  বাঙালি জাতির চেতনাকেই যেন জানান দিয়ে যায়, জাগবার সময় এখনই, নয়ত আর কখনই নয়।নূর হোসেন  যেন কবি সৈয়দ হকের নূরলদীন।
নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়
যখন শকুন নেমে আসে এই সোনার বাংলায়;
নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়
যখন আমার দেশ ছেয়ে যায় দালালেরই আলখাল্লায়;
নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়
যখন আমার স্বপ্ন লুট হয়ে যায়;
নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়
যখন আমার কণ্ঠ বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায়;
নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়
যখন আমারই দেশে এ আমার দেহ থেকে রক্ত ঝরে যায়।
আজ নূর দিবসে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক নূরের মতো কোনো অকুতোভয় কান্ডারি।যিনি এগিয়ে নিয়ে যাবেন এদেশ ও জাতিকে গৌরবের সুউচ্চ শিখরে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...