সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

৩৫ এর বাস্তবায়ন হোক, যুব দিবসের হোক অঙ্গিকার



আজ সারাদেশে পালিত হচ্ছে জাতীয় যুব দিবস। এই দিবসের প্রাক্কালে এদেশের যুবারা অবস্থান নিয়ে আছে রাজপথে। তাদের একটিই দাবি সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করতে হবে।জোরালোভাবে এ দাবী তারা কয়েক বছর ধরে জানিয়ে আসছে। তাদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস ও ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বয়স বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। দাবিটি সময়োপযোগী ও যৌক্তিক হবার পরও বাস্তবায়ন না করাটা সত্যিই দুঃখজনক। এ নিয়ে আমার বেশ কয়েকটি লেখা ইতোমধ্যে পত্র পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।  লেখাগুলোয় ৩৫ কেন প্রয়োজন?  তা বিভিন্ন যুক্তির নিরিখে উপস্থাপন করা হয়েছে। আপাত: দৃষ্টিতে ৩৫ এর মতো যৌক্তিক আন্দোলনে দাবি পূরণ না হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ বিদ্যমান। প্রথমত : ৩৫ আন্দোলনকারীরা এ দাবীর যথার্থতা ও যৌক্তিক কারণ সরকারের উপর মহলে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন। 
দ্বিতীয়ত : সবাই ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৩৫ চাই বলে সরব কিন্তু রাজপথে তাদের শারীরিক অনুপস্থিতি। 
তৃতীয়ত :জোরালো কর্মসূচি  জনসংযোগের অভাব এবং সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সাথে সম্পর্কেের যথেষ্ট ঘাটতি।
চতুর্থত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো এ আন্দোলনে ৩৫ ঊর্ধ্ব বয়সীদের নেতৃত্বে থাকা। যেকারণে এ আন্দোলনে দ্বিধা দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিং। ৩৫ ঊর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তিরা এ আন্দোলনের গুরুত্ব কি বুঝবে?  তার পাবারই বা কি আছে? তারা থাকবে মিডিয়ায় নিজেদের প্রদর্শনে ব্যস্ত।  এতে কাজের কাজ কিছুই হবে না।
পঞ্চমত : এ দাবি পূরণ হবার অন্যতম আরেকটি কারণ হলো, জাতীয় সংসদে তারুণ্যের কোনো প্রতিনিধি নেই। যে কয়জন আছেন তারাও দলের বাইরে গিয়ে কিছু বলতে ও করতে পারেন না। দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৭০ ভাগ জনগোষ্ঠীরর বয়স ৩৫ এর নিচে। বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যের গড় বয়স ৬০। জাতীয় সংসদে যুব প্রতিনিধি রয়েছে মাত্র শতকরা ০.৩ ভাগ। সেহিসাবে ৩০ বছরের কম বয়সী সংসদ সদস্যদের বিশ্ব র‌্যাকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৬ তম। তাহলে বুঝেন সত্তর আশি বছর বয়সের রাজনীতিবীদেরা এদেশের যুবকদের পালস কতটুকু বুঝবেন? ৩৫ এর দাবিটি আজ কবিতার কয়েক ছত্রের মতো হয়েছে।
চিরসুখী-জন ভ্রমে কি কখন ?
ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে !
কি যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে
কভু আসে বিষে দংশনে যারে করিছে ব্যাপন। 
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বর্তমান বয়সসীমা বিশ্বের ১৬২টি দেশের সর্বনিম্ন বয়সের চেয়েও পাঁচ বছর কম। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো উন্নত দেশে চাকরির সর্বোচ্চ বয়স ৪০ থেকে ৫৯ বছর। হাতেগোনা বিশ্বের কয়েকটি দেশে চাকরির সর্বনিম্ন বয়স ৩৫ বছর হলেও বাংলাদেশে তার চেয়েও কমিয়ে ৩০ বছরে রাখা হয়েছে। বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ, ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি, সর্বোপরি ’৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চায়। কিন্তু অমিত সম্ভাবনার যুব সমাজকে কাজে লাগানো ছাড়া আর এসব বাস্তবায়ন আষাঢ়ে গল্পের মতো মনে হয়। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী যে কোনো নাগরিক যুব বলে গণ্য হবেন। এমন বিধান রেখে জাতীয় যুবনীতি ঘোষণা করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৪০ ভাগ যুবক। সেহিসাবে দেশ যুবকের সংখ্যা ৫ কোটি। সরকারি বেসরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে বেকারত্বের হার ৪.২ শতাংশ। যদিও সংখ্যাটি এর চেয়েও বেশি। উচ্চ শিক্ষিত বেকারত্বের হার ১০.৬ শতাংশ। গতকাল যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলযুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে ২৮ শতাংশ যুবক বেকার । বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ২২ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। এদের মধ্যে কর্মসংস্থান হয় মাত্র ৭ লাখ মানুষের।যেমন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর  হিসাব মতে, দেশে কর্মক্ষম ৫ কোটি ৬৭ লাখ লোকের মধ্যে কাজ করছে ৫ কোটি ৫১ লাখ। তার অর্থ, বেকারের সংখ্যা মাত্র ২৬ লাখ। কিছু দেশে মাত্র ২৬ লক্ষ বেকার এটি বিশ্বাসযোগ্য কোনো পরিসংখ্যান নয়। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বেকার যুবকের হার ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার জন্য কাজ করছে সরকার। সরকার যদি সত্যিই বেকার যুবকদের বেকারত্ব ঘুচাতে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয় তাহলে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা অবশ্যই ৩৫ করতে হবে।বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ হওয়ায় অন্যান্য বেসরকারি সেক্টরেও চাকরির বয়সসীমা ৩০ নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। এতে করে অনেক যুবকের স্বপ্ন ভঙ্গের কারণ হচ্ছে। বিভিন্ন অযৌক্তি-কুযুক্তি দেখিয়ে ৩৫ এর দাবিকে নাকচ করছেন। যদি পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ৩০ এর উপর বয়স বাধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে, তাহলে আমাদের বয়স বৃদ্ধিতে এতো অজুহাত ও কালক্ষেপণ কেন? আপনারা কথায় কথায় দেশটাকে কানাডা, সিঙ্গাপুর, জাপান আবার কখনো কখনো সুইজারল্যান্ড বানিয়ে দেনএসমস্ত দেশ তারুণ্যের বয়স ৩০ এর ফ্রেমে বেঁধে রেখে এত উন্নত হয়নি। তারা তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজ উন্নত দেশ হয়েছে।এগুলো শুনতে বড়ই অদ্ভুত শোনায়।বাংলাদেশের বিশাল তরুণ সমাজকে ৩০ বছর হলেই উপেক্ষা করা হয়। ছাব্বিশ বছরে অর্জিত সনদপত্র ৩০ বছরে উত্তীর্ণ হলেই আস্তাকুঁড় নিক্ষেপ করেন। তারুণ্যের স্বপ্ন আঁতুড়ঘরেই হত্যা করেন। সেখানে উন্নত রাষ্ট্র গড়ার এ দাবী জনগণের সঙ্গে মশকরার শামিল ও হাস্যকর।৩৫ আন্দোলনকারীরা তারা চাকরি চায় না। তারা চায় চাকরিতে আবেদনের সুযোগ মাত্র। এ সুযোগ তাদের দিন। পারলে তারা উত্তীর্ণ হয়ে দেশ ও জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করবে। না পারলে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়ে এলাকায় গিয়ে তারা মাছ চাষ, ক্ষেত খামারে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করবে। কিন্তু তারুণ্যের ৩৫ এর সুযোগ ও স্বপ্ন আপনারা গলাটিপে হত্যা করতে পারেন না।পাকিস্তান আমলে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ছিল ২৫ বছর, পরবর্তীতে তা ২৮ করা হয়,এর পর এখন ৩০ হয়েছে। এছাড়া ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ছিল ২৭ বছর। ১৯৯১ সালে তা বাড়িয়ে বিএনপি সরকার ৩০ বছর করে। এরপর আর বয়সসীমা বাড়ানো হয়নি।যদিও এখন মানুষের গড় আয়ু অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু ১৯৯১ সালের পর চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা সেই অনুপাতে বাড়ানো হয়নি। যা খুবই দুঃখের ও হতাশাজনক।
২০১৪ সালে গড় আয়ু ছিল ৭০ দশমিক ৭ বছর,২০১৫ সালে ৭০.৯ বছর, ২০১৬ সালে ৭১.৬ বছর, ২০১৭ গড় আয়ু ৭২ বছর, বিগত বছরগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু কিছুটা বেড়ে ৭২ দশমিক ৩ হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষের আয়ু ৭০ দশমিক ৮ বছর আর নারী ৭৩ দশমিক ৮ বছর।আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে তিন মেয়াদে সরকার গঠন করলেও বয়স বাড়ায়নি। এমনকি নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামীলীগ বয়স বৃদ্ধির কথা বললেও এখন বেমালুম ভুলে আছে। যদিও সরকার ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সরকারি চাকরিতে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স ৫৭ থেকে ২ বছর বাড়িয়ে ৫৯ বছর করে। মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স এক বছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করে। কিন্তু সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির জন্য তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং সরকারের একটি পক্ষ ও আমলারা বয়স বৃদ্ধির প্রস্তাবনা আটকিয়ে রেখেছেন।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ এর উপরে হলেও শুধু বাংলাদেশই ভিন গ্রহের দেশ হিসেবে বয়স রাখা হয়েছে ৩০। যা রীতিমতো অযৌক্তিক ও সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকারের বরখেলাপ।বিভিন্ন সময়ে চাকরিতে বয়স বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও অজানা কারণে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী ইশতেহারে বয়স বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেওয়া হলেও নির্বাচনী বৈতরণী পার হবার পর তারা বেমালুম ভুলে আছেন। আজ যুব দিবসে তারুণ্যের ৩৫ দাবিটি মেনে নিয়ে আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুব সমাজকেও শামিল করার সময় এসেছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...