সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ চাই



শোষণ বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের চেতনা ছিল সাম্য ও সমতার ভিত্তিতে ন্যায় ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ। সেই চেতনা আজ সভা-সেমিনার বিবৃতি বক্তৃতার মঞ্চেই সীমাবদ্ধ। রাষ্ট্রের বিশাল অংশ জুড়ে আমাদের সেই চেতনা অনুপস্থিত ও উপেক্ষিত। আজ অধিকার আদায়ে বাংলাদেশে হরতাল অবরোধ ভাঙচুরের বিকল্প কিছু কল্পনা করা যায় না। যার অসংখ্য নজির রয়েছে।

নিকট অতীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সফলতা অর্জন অন্যদিকে আন্দোলনে ব্যর্থ হলে পরিণতি কি অপেক্ষা করে তার নজিরও এদেশে দৃশ্যমান। আন্দোলনে ব্যর্থ হবার কারণে তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী আজো কারাগারে প্রকোষ্ঠে অন্তরীণ। সেটিও আমাদের জানা। এদেশে সবকিছুতে যুক্তি ও আবেগ চলে না। তবে সেই যুক্তি যদি হয় কথিত যুক্তি অসার ও ভ্রান্ত তথ্য উপাত্তে ভরা। তাহলে প্রতিউত্তরে তো কিছু বলতেই হয়।

বাংলাদেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পঁয়ত্রিশের দাবিতে দীর্ঘ অর্ধযুগ ধরে একটি সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গড়ে উঠেছে। তারা বিভিন্নভাবে জনমত সৃষ্টি করে এদেশের তরুণ যুবাদের মধ্যে ৩৫ এর পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। সেই আন্দোলন দাবি আদায়ে কিছুটা গতি সঞ্চারও করেছে। পত্র-পত্রিকা মিডিয়ায় এ দাবির প্রয়োজনীয়তা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে ও হচ্ছে। সরকারেরও নীতি নির্ধারণীর পর্যায়ে বয়স বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু অজানা কোনো কারণে এ প্রক্রিয়া বারবার হোঁচট খেয়েছে ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্বিত হচ্ছে।

যেসব যুক্তি দেখিয়ে সরকার বারংবার ৩৫ এর দাবি অগ্রাহ্য করছে তা নিতান্ত মামুলী ও তাতে অকাট্য যুক্তির অভাব রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার যুক্তির চেয়ে বেশি প্রয়োজন জনগণের আবেগ অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করা। সেক্ষেত্রে রাজনীতিবিদ ও সরকার এ সহজ বিষয়টি অনুধাবনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বুঝতে হবে জনগণকে নিয়েই আপনাদের রাজনীতি। সেই জনগণকে উপেক্ষা করে নেওয়া দায় দায়িত্বহীন পদক্ষেপ জনগণ থেকে আপনাদের বিচ্ছিন্ন করবে, দূরত্ব তৈরি করবে।

তবে যেদেশে জাতীয় ফল কাঁঠাল কিন্তু জাতীয় বৃক্ষ আম গাছ, সেখানে জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার হলে জাতীয় ডিম ঘোড়ার ডিম হলেও অবাক হবার কিছু নেই। সরকারের উচিত সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ সুবিধা তৈরি করে দেওয়া। যাতে বয়সের কারণে কেউ পিছিয়ে যেতে না পারে। আবার এক শ্রেণী সুযোগ পেয়ে এগিয়ে যাবে এটাতো চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানসহ ভুক্তভোগীর জন্য মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।

কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া চাকরিতে প্রবেশের বয়স নির্দিষ্ট করে দেওয়া মানে বিশাল জনগোষ্ঠীর লালিত স্বপ্ন বিনষ্ট করা ও সনদপত্রের কবর রচনা করা। একটি শ্রেণীকে কর্মবিমুখ করে রেখে দেশ ও জাতির উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত করা উচিত হবে না। সরকারি চাকরিতে বয়স নির্দিষ্ট থাকার কারণে বেসরকারি জব সেক্টরেও বয়সের বাধ্য বাধকতা তৈরি হয়েছে। অনেক তরুণ যুবক তাদের অর্জিত মেধা ও প্রতিভা সুযোগের অভাবে কাজে লাগাতে পারছেন না। যদিও এদেশে সত্তর আশি বছর বয়সে রাজনীতিবিদরা দেশ চালাতে পারেন ও নীতি নির্ধারণ করতে পারেন।

কিন্তু কি অদ্ভুত অনিয়ম! ৩০ বছর বয়স হলেই আপনি অথর্ব। সরকারি চাকরিতে প্রবেশে অযোগ্য ও মেধাহীন। এসব দ্বিচারিতা ও ঔপনিবেশিক শাসকের মতো আচরণের পরিবর্তন ও সংস্কার আনতে হবে। সবার জন্য চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমার লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে।

৩৫ আন্দোলনকারীরা চাকরি চান না, আবেদনের সুযোগ চান। তারা বয়সের কারণে চাকরি পাক না পাক সেটা অন্য বিষয়। তাদেরকে সরকার অন্তত আবেদন করার সুযোগ দিয়ে দেখতে পারে।

চীন সফর নিয়ে ৮ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চাকরির বয়স ৩৫ করার বিপরীতে যুক্তি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে তিনি বিগত তিনটি বিসিএস পরীক্ষায় পাশের হারের পরিসংখ্যান তুলে ধরে দাবি করেন, ২৯ বছরের ঊর্ধ্বে পরীক্ষার্থীদের ফল খারাপ হচ্ছে, ৩০-এর পর নিয়োগ পেলে সংসার সন্তান সামলাতে কষ্ট হবে, পেনশনের ঝামেলা বাড়বে।

প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারীরাও বসে নেই। তারাও যুক্তি খন্ডন করে বক্তব্য দিয়েছেন, তাদের বক্তব্য হলো প্রথমত: ২৯ বছরের ঊর্ধ্বে শিক্ষার্থীদের ফলাফল যদি খারাপ হয়, তাহলে প্রতিযোগিতায় জুনিয়ররাই এগিয়ে থাকবে এবং নতুনরা বেশি সুযোগ পাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী গত কয়েকদিন আগে সংসদে বলেছেন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করলে নতুনরা বঞ্চিত হবেন। তাহলে প্রধানমন্ত্রী নিজেই স্ববিরোধী কথা বলছেন এবং অযৌক্তিক মন্তব্য দাঁড় করিয়েছেন।

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা কেন ৩৫ দিতেই হবে এবার যুক্তিতে আসি। প্রথমত: দেশের একটি সংবিধান আছে। সেই সংবিধানের আলোকে দেশ চলবে। দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে বৈষম্যমূলক আইন দিয়ে কাউকে বঞ্চিত করার অধিকার কারো নেই। এক্ষেত্রে সংবিধানের মৌলিক অধিকার বিষয়ের অনুচ্ছেদের ধারা গুলো খতিয়ে দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে সংবিধানের ২৮ ও ২৯নং ধারা প্রযোজ্য। এর ব্যত্যয় ঘটলে আন্দোলনকারীরা সংবিধানের ১০২নং ধারা অনুসরণ করতে পারেন। যদিও বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এটি কামনা করা ও প্রতিকার পাওয়া দুষ্কর।

দ্বিতীয়ত: বাংলাদেশের যুব নীতি ২০১৭ আলোকে এদেশে যুবক বলে গণ্য হবে ১৮-৩৫ বয়সীরা। বিষয়টি বড়ই হাস্যকর ও অনুতাপের। একদিকে সরকারি চাকরিতে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে যারা তারা আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন না। বরং তাদের বৃদ্ধের কাতারে ফেলে অমেধাবী বানানো হচ্ছে। তাহলে যুব নীতিতে ৩০ বছরের ওপরের বয়সীদের রেখে কি লাভ? এটি কি যুবা তরুণদের সঙ্গে এক প্রকারের মশকরা নয় কি? এটি হচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল ও জাতীয় বৃক্ষ আম গাছের মতো।

তৃতীয়ত: বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিতে বিভিন্ন সময় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছে। দেশের মানুষের গড় আয়ু যখন ৪৫ বছর ছিল, তখন চাকরিতে প্রবেশের বয়স ছিল ২৭ বছর, আয়ু বেড়ে ৫০ হলে ৩০ বছর করা হয়। এখন গড় আয়ু বেড়ে ৭২ বছর হওয়ায় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা কোনোভাবেই ৩০ বছর থাকতে পারে না। অবশ্যই এক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়াতে হবে।

চতুর্থত: সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বর্তমানে চাকরি শুরুর বয়স ৩০ হলেও মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, উপজাতি কোটায় এই বয়স ৩২, নার্সের চাকরির জন্যে ৩৬ আর বিভাগীয় প্রার্থীর কোটায় ৩৫ বছর রয়েছে। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কী তথ্য উপাত্ত দেবেন। বয়স বৃদ্ধি পেলে জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পেতে থাকে এক্ষেত্রে কি প্রযোজ্য নয়? প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ডেটা অনুযায়ী, ৩৫-তম, ৩৬ তম এবং ৩৭ তম বিসিএস পরীক্ষায় ২৯ বছর বা তার ঊর্ধ্বে পাশ করা পরীক্ষার্থীর হার যথাক্রমে ৩.৪৫ শতাংশ, ৩.২৩ শতাংশ এবং ০.৬১ শতাংশ।সুবিধা ভোগী যাদের বয়স তিরিশের চেয়ে বেশি তাদের ব্যাপারে আপনি কি পরিসংখ্যান দেবেন?

পঞ্চমত: বাংলাদেশের বর্তমান এ মহাবিশ্বের একটি দেশ। ভিনগ্রহের কোনো অধিবাসী আমরা নই। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হয়। বিশ্বায়নের এ যুগে এটিই ধ্রুব সত্য।

বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বর্তমান বয়সসীমা বিশ্বের ১৬২টি দেশের সর্বনিম্ন বয়সের চেয়েও পাঁচ বছর কম। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো উন্নত দেশে চাকরির সর্বোচ্চ বয়স ৪০ থেকে ৫৯ বছর। হাতেগোনা বিশ্বের কয়েকটি দেশে চাকরির সর্বনিম্ন বয়স ৩৫ বছর হলেও বাংলাদেশে তার চেয়েও কমিয়ে ৩০ বছরে রাখা হয়েছে।

আমাদের পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৪০, বিভিন্ন প্রদেশে বয়সসীমা ৩৮ থেকে ৪০। আফ্রিকায় চাকরি প্রার্থীদের বয়স বাংলাদেশের সরকারি চাকরির মতো সীমাবদ্ধ নেই। অর্থাৎ চাকরিপ্রার্থীদের বয়স ২১ হলে এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে যেকোনো বয়সে আবেদন করা যায়।

রাশিয়া, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্যে যোগ্যতা থাকলে অবসরের আগের দিনও যে কেউ সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে পারেন। চাকরির সর্বোচ্চ বয়স ৩৫ বছর রেখেছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। এরমধ্যে কাতার, তাইওয়ান, এঙ্গোলা, ইতালী ও নরওয়ে উল্লেখযোগ্য।যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল গভর্নমেন্ট ও স্টেট গভর্নমেন্ট উভয় ক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়স কমপক্ষে ২০ বছর এবং সর্বোচ্চ ৫৯ বছর। কানাডার ফেডারেল পাবলিক সার্ভিসের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২০ বছর হতে হবে, তবে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে নয় এবং সিভিল সার্ভিসে সর্বনিম্ন ২০ বছর এবং সর্বোচ্চ ৬০ বছর পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে আবেদন করা যায়।

ষষ্ঠত: মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ স্পিকার থাকাবস্থায় ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতির বক্তব্য বাস্তবায়ন করাও একটি সম্মানের বিষয়।

সপ্তমত: ২০১৮ সালে ১৭ ডিসেম্বর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের ইশতেহার ঘোষণা করা হয় এবং সেখানে বলা হয় যে- সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ইশতেহারে প্রায় পাঁচ কোটি ৩০ লাখ তরুণদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, সরকার ক্ষমতায় গেলে তরুণরা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রয়োজন এবং তরুণদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির জন্য আবেদন করার আহ্বান জানাতে পারবে।

অষ্টমত: সরকার চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে ৫৭ থকে ৫৯ বছর করেছে, যা ৬১-তে উন্নীত করার আলোচনা চলছে। অন্যদিকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৬৫ বছর এবং বিচারকদের ৬৭ বছর। সরকারি চাকরির অবসরের বয়সসীমা বাড়লে আনুপাতিক হারে অবশ্যই প্রবেশের বয়সও বাড়াতে হবে এবং এটাই যৌক্তিক।

নবমত: এ পর্যন্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে তিনবার সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২১তম সভায় বয়স ৩২ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের জুনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২৯তম সভায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার সুপারিশ করা হয়। সর্বশেষ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে চাকরিতে প্রবেশের বয়স পাঁচ বছর বাড়িয়ে ৩৫ করার বিষয়ে ফের সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি। একইসঙ্গে অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। জাতীয় সংসদ ভবনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ সুপারিশ করা হয়।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান এর মতে, দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৭৭ হাজার। এসব বেকারের অধিকাংশের বয়স তিরিশ বছরের ঊর্ধ্বে। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের জন্য হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করতে হবে। অভিমান জেদ ভুলে তারুণ্যের ৩৫ দাবী মেনে নেওয়াটাই হবে যুগোপযোগী পদক্ষেপ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...