সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিশ্ব শিক্ষক দিবস ও আমরা কোথায়?

প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়ে আসছে। এ দিবসটিকে আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবসও বলা হয়।
আজকের দিনে সেই সমস্ত আলোকিত মানুষদের স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় যাদের পরশে অন্ধকার পেরিয়ে আলোর মিছিলে শামিল হতে পেরেছি। ১৯৯৪ সাল থেকে ইউনোসকো  উদ্যোগে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হচ্ছে। শিক্ষকদের অবস্থা, সমাজে তাঁদের অপরিহার্যতা, মর্যাদা এবং শিক্ষক ও শিক্ষাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের ওপর আলোচনা ও গণসচেতনতার  জন্য ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ৫ অক্টোবর ফ্রান্সের প্যারিস শহরে আন্তর্দেশীয় এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিস্তারিত আলোচনা শেষে সভায় শিক্ষকদের অবস্থা, মর্যাদা ও অন্যান্য বিষয়সংক্রান্ত একটি সুপারিশমালা প্রকাশ করা হয়।এবারে ২০১৯ সালের শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো—‘Young Teachers: The future of the Profession’ অর্থাৎ ‘তরুণ শিক্ষকরাই  শিক্ষকতা পেশার ভবিষ্যৎ।আজ যখন মহাসমারোহে শিক্ষক দিবস পালন হচ্ছে  তখন কিছু প্রশ্ন মনে উদ্রেক করছে।
প্রথমতঃ শিক্ষকতায় পেশায় যারা আছেন তারা কি খুব ভালো আছেন?
দ্বিতীয়তঃ তারা কি পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন?
তৃতীয়ত: তরুণরা কি এই পেশায় আসতে আগ্রহী হচ্ছেন?
চতুর্থত:শিক্ষকতা পেশায় কি লবিং তদবির ছাড়া মেধায় নিয়োগ হচ্ছে?
যদি সব ঠিকঠাক চলে আলহামদুলিল্লাহ। না চললে রাষ্ট্রকে তা তদারকি ও মেরামত করতে হবে। মনে রাখতে হবে শিক্ষক সমাজ হচ্ছে জাতি গঠনের কারিগর। তাদের সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত রেখে ডিজিটাল উন্নত জাতি গঠন করার স্বপ্ন দিবাস্বপ্নের মতো। শিক্ষকদের মর্যাদা দিতে হবে ।শিক্ষকের মর্যাদা বলতে বুঝানো হয়েছে,  শিক্ষকতা কাজের গুরুত্বানুসারে এবং সততার সাথে সম্পন্নের যোগ্যতা ও পারদর্শিতার কারণে প্রদত্ত সম্মান ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি অন্যান্য পেশাজীবি সম্প্রদায়ের তুলনায় তাঁদের কাজের শর্তাদি, পারিশ্রমিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদির মধ্যে সামঞ্জস্যবিধান করা। শিক্ষকতা পেশাকে এখনো সম্মানের চোখে দেখা হয় না। বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকতা পেশাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখা হয়। মনে রাখা প্রয়োজন পিতামাতা সন্তান জন্মদাতা কিন্তু শিক্ষক হলেন তার জ্ঞানদাতা। শিক্ষককে বলা হয় ছাত্রছাত্রীদের আধ্যাত্মিক জনক।জীবিকার প্রয়োজনে সমাজে সৃষ্টি হয়েছে নানা শ্রেণী ও পেশার। একই সমাজে জন্মগ্রহণ করে কেউ পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন চিকিংসা, কেউ কৃষি, কেউবা ব্যবসা আবার কেউ শিক্ষকতা। এছাড়া আরো কত পেশা সমাজে রয়েছে। যদিও শিক্ষকতাকে পেশা বলা হয় মূলত এটি একটি ব্রত।
যুগে যুগে অতি অত্যাচারী শাসকও নত শিরে গুরুর সামনে দাঁড়িয়েছেন। গুরুকে অসম্মানের ধৃষ্টতা কেউ দেখাননি। চাণক্য শ্লোকে আছে, ‘এক অক্ষরদাতা গুরুকেও গুরু বলিয়া মান্য করিবে। এক অক্ষরদাতা গুরুকে যে গুরু বলিয়া মান্য করে না, সে শতবার কুকুরের যোনীতে জন্মগ্রহণ করে চণ্ডালত্ব লাভ করিবে।

একজন শিক্ষক শিক্ষার্থী তথা তার শিষ্যকে কি শিক্ষা দেবেন। কিভাবে গড়ে তুলবেন সে নির্দেশনা পাই পৃথিবীর সব থেকে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের পুত্রের শিক্ষককে পুত্রের ব্যাপারে যে চিঠি লিখেছিলেন, তা হয়ে উঠেছে ইতিহাসের দলিল। তিনি লিখেছিলেন—‘আমার পুত্রকে জ্ঞানার্জনের জন্য আপনার কাছে প্রেরণ করলাম। তাকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন—এটাই আপনার কাছে আমার বিশেষ দাবি।আমার পুত্রকে অবশ্যই শেখাবেন—সব মানুষই ন্যায়পরায়ণ নয়, সব মানুষই সত্যনিষ্ঠ নয়। তাকে শেখাবেন পাঁচটি ডলার কুড়িয়ে পাওয়ার চেয়ে একটি উপার্জিত ডলার অধিক মূল্যবান। এও তাকে শেখাবেন, কীভাবে পরাজয়কে মেনে নিতে হয় এবং কীভাবে বিজয়োল্লাস উপভোগ করতে হয়। হিংসা থেকে দূরে থাকার শিক্ষাও তাকে দেবেন। আমার পুত্রকে শেখাবেন—বিদ্যালয়ে নকল করার চেয়ে অকৃতকার্য হওয়া অনেক বেশি সম্মানজনক।'আমার পুত্রের প্রতি সদয় আচরণ করবেন, কিন্তু সোহাগ করবেন না। কেননা আগুনে পুড়েই ইস্পাত খাঁটি হয়। আমার সন্তানের যেন অধৈর্য হওয়ার সাহস না থাকে, থাকে যেন সাহসী হওয়ার ধৈর্য। তাকে এ শিক্ষাও দেবেন—নিজের প্রতি তার যেন সুমহান আস্থা থাকে আর তখনই তার সুমহান আস্থা থাকবে মানবজাতির প্রতি।'আজ শিক্ষকরা নানা প্রকার অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িত। বর্তমানে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও শিক্ষকরা দলবাজি, দুর্নীতিতে নিজেদের অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে ফেলেছেন। স্কুল কলেজ মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দ্বারা ছাত্রীরা যৌন নিপীড়ন ও হেনস্তার শিকার হচ্ছে।অথচ এই শিক্ষকরাই একসময় শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল।আজ অধিকাংশ শিক্ষক নৈতিকতার মান দণ্ডে উত্তীর্ণ নন। যে কারণে শিক্ষকতার মতো মহান পেশা কলঙ্কিত হচ্ছে।   ফ্রেডরিক ফ্রয়েবেল বলেন, 'শিশু হলো উদ্যানের চারাগাছ। শিক্ষক হলেন তার মালী। শিক্ষকের কাজ হলো সযত্নে চারাগাছটিকে বড় করে তোলা। শিশুর মধ্যে লুকিয়ে থাকা সৎ ও সামাজিক গুণাবলীর বিকাশ সাধন করা শিক্ষকের কর্তব্য।'আমরা কি সেই দায়িত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে কি পালন করতে পারছি?সাম্প্রতিককালে ছাত্র-শিক্ষকের শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্পর্কে দুরত্ব তৈরী  হয়েছে। শিক্ষকের বাড়াবাড়ি রকমের শাসনে শিক্ষার্থীরা স্কুল ছাড়ছে, কখনো কখনো তারা আত্মহত্যা পর্যন্ত করছে। শিক্ষকরাও কখনো কখনো ছাত্রদের হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছেন। শিক্ষককে দেখার পর সম্মান জানাতে এগিয়ে না এসে,শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের যমের  মতো ভয় পেয়ে পালিয়ে যায় ।এসব বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে সম্মান হারাচ্ছেন শিক্ষকরা। সামাজিক ও রাজনৈতিক নানা কারণে অপদস্থ হচ্ছেন শিক্ষকরা।অথচ চীনের দার্শনিক কনফুসিয়াস বলেছেন-'শিক্ষক হবেন জ্ঞান ও প্রজ্ঞার উৎস। তিনি হবেন একজন আদর্শ শাসক।'একজন ভালো শিক্ষক অবশ্যই ভালো গাইড, পরিচালক এবং মেন্টর।  ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে— A good teacher is he who has good character and teaches better than other ( একজন ভালো শিক্ষক হলেন তিনি, যিনি ভালো নৈতিক চরিত্রের অধিকারী এবং তিনি অন্যদের তুলনায় উত্তম পাঠ দান করেন)। কথায় আছে, শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করেন যিনি।নীতি নৈতিকতাহীন মানুষ কখনোই আদর্শ শিক্ষক হতে পারেন না। একজন শিক্ষক হবেন সুন্দর মন, পবিত্র আত্মা ও ইতিবাচক  দৃষ্টিভঙ্গির আধিকারী, জ্ঞানী ও আদর্শ মানুষ। শিক্ষকের সংজ্ঞায় শিক্ষাবিদ ও বহুভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন,শিক্ষক হতে চাও ভালো কথা, মনে রেখো তুমি সারা জীবনের জন্য ছাত্র হলে।রুশো বলেছেন, সু-অভ্যাস গঠনের নাম শিক্ষা, আর শিক্ষক শিক্ষার্থী সু-অভ্যাস গঠনের নির্দেশক।বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, গায়ের জোরে মোড়ল হওয়া যায়, সন্ত্রাসীও বটে, কিন্তু গুরু হওয়া যায় না। জন ডিউই বলেন, সুন্দর, বিশ্বস্ত এবং পবিত্র জীবনের উপলব্ধি হলো শিক্ষা, আর শিক্ষক হবেন এ উপলব্ধির মৌলিক কারিগর। মূলকথা শিক্ষক হলেন সমাজের এমন একজন আদর্শবান ব্যক্তি যার কথা ও কাজ এক হবে।যাকে অনুসরণ এবং অনুকরণ করে সমাজের সবাই আলোকিত হবে। যিনি হবেন সত্য-মিথ্যার প্রভেদকারী এক মহান আদর্শবান ব্যক্তি। তিনি এমন এক আদর্শ নিয়ে চলবেন, যার মধ্যে থাকবে ভক্তি, বিশ্বাস এবং কর্ম। সুন্দর মনের এবং সুন্দর মানের প্রজন্ম গড়ে তোলাই তাঁর প্রধান দায়িত্ব হবে।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইকোনোমিক্স এন্ড সোসাল সিসাচ এবং ভারকি ফাউন্ডেশনের ‘গ্লোবাল টিসার্চ স্ট্যাটাস ইনডেক্সে-২০১৮’ শীর্ষক  প্রতিবেদনে বলা হয় বিশ্বে গড়ে ৩৬ শতাংশ ছাত্রছাত্রী তাদের গুরুজনকে সম্মান করেন। এছাড়া শিক্ষকতা পেশাও সামাজিক অবস্থান ও মর্যাদা হারাচ্ছে অনেক উন্নত দেশে। যদিও জরিপে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।কিন্তু বাংলাদেশের অবস্থান যে খুব ভালো তা হলফ করে বলা যায় না। জরিপে ৩৫ টি দেশের  ৩৫ হাজার অংশগ্রহণকারী মনে করেন- চীনের ৮১ শতাংশ ছাত্রছাত্রী তাদের শিক্ষককে সম্মন করে থাকেন। যেখানে সারা বিশ্বে গড়ে ৩৬ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী তাদের শিক্ষককে সম্মান করে থাকেন।জরিপে বলা হয়, বিশ্বের মধ্যে এশিয়ার দেশগুলোতে শিক্ষকতা পেশা সামাজিক অবস্থান ও মর্যাদার দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে। চীনে এই পেশা সবচেয়ে বেশি মর্যাদার। এর পরেই রয়েছে মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, ভারত, নিউজিল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুর।
পৃথিবীর আদি থেকে শেষ অবধি দুটি পেশার মানুষের প্রয়োজন কখনই শেষ হবে না- শিক্ষক, ও চিকিৎসক। আজ শেষ করছি মোজাফফর আহমেদের লেখা থেকে দুটি পংক্তি তুলে ধরে- 'শিক্ষকতা একটা ধর্ম, একে জীবনে ধারণ করতে হয়; জ্ঞানীমাত্রই শিক্ষক নন।'

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...