সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অভিশপ্ত পরকীয়া সম্পর্ক এবং এর শাস্তি!

পরকীয়ার আগ্নেয় থাবায় বিপর্যয়ের মূখে সংসার ও পরিবার প্রথা।  অনেকেই সমাজ, লোকসজ্জা ও সন্তানের বভিষ্যত চিন্তা করে নিরবে সহ্য করে যাচ্ছে স্বামী বা স্ত্রীর এই নিষিদ্ধ প্রণয় । অনেকেই আবার এর অনল যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে ঘটাচ্ছেন বিবাহ বিচ্ছেদ । কেউবা আবার বেছে নিচ্ছে অত্মহননের মতো অভিশপ্ত পথ। বিবাহিত কোন নারী বা পুরুষ স্বীয় স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির সঙ্গে কোনও ধরণের সর্ম্পক কিংবা বিবাহবহির্ভূত প্রেম, যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার মত গর্হিত কর্মকে কীভাবে ইসলাম সমর্থন করতে পারে?এ বিকৃত কর্মের অসারতা বিবেকও ধিক্কার দেয়। নিজ স্বামী বা স্ত্রী অন্য কারো সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করবে, সুস্থ বিবেকবান কোনো মানুষ এটা মেনে নিতে পারে না। এ কর্মের কারণে সমাজ যেমন শৃঙ্খলতা হারায়, তেমনি পারিবারিক বন্ধনেও ধরে ফাটল। পর্যুদুস্ত হয়ে পড়ে সামাজিক সকল রীতিনীতি।
পুরুষ-মহিলা সবাইকে চরিত্র সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সুরা বনি ইসরাইল, ৩২ )
হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুখ ও লজ্জাস্থানের হেফাজতের জামিনদার হবে আমি তার বেহেশতের জামিনদার হবো।’ (বুখারিঃ ৭৬৫৮ )হযরত ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড় পাপ কি? তিনি বললেন, আল্লাহর সমকক্ষ কাউকে নির্ধারণ করা। আমি বললাম, এটা নিশ্চয়ই জঘন্যতম গুনাহ। তারপর কি ? তিনি বললেন; তোমার সন্তান তোমার সাথে আহারে বিহারে অংশ নিবে এ আশংকায় সন্তানকে হত্যা করা। আমি বললাম, এরপর কি? তিনি বললেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া। [বুখারি ও মুসলিম

বনি ইসরাইলের এলাকায় এক পাহাড় ছিল, যে পাহাড়টিকে তারা খুবই সম্মানিত মনে করত। এবং সেটিকে খুব সম্মান করত।এবং কোন কথার ফয়সালা করার সময়, যদি কসম উঠাতে হত তখন তারা সে পাহাড়ের উপর উঠে কসম খেত আর অন্যরা তখন সে কথাটিকে সত্য হিসেবে মেনে নিত। সে শহরে এক সুন্দরী রমণী ছিল তার সাথে এক তরুণের অবৈধ সম্পর্ক ছিল।নারীটি তাকে তার ঘরে ডাকতে লাগল। তখন মহিলার স্বামীর সন্দেহ হতে লাগল, আর স্বামী বলল আমার সন্দেহ হচ্ছে আমার অনুপস্থিতিতে কেহ তোমার কাছে আসে। মহিলাটি তা অস্বীকার করল। তখন স্বামী বলল যদি তুমি সত্যবাদী হও তাহলে পাহাড়ের উপর উঠে কসম কর যে তোমার সাথে কারো অবৈধ সম্পর্ক নেই। মেয়েটি বলল ঠিক আছে আমি আগামীকাল পাহাড়ের উপর চড়ে কসম খেতে প্রস্তুত। আর মেয়েটি গোপনে তার সে প্রেমিককে বলল যে আগামীকাল তুমি পাহাড়ের নিচে একটি গাধা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। আমি আর আমার স্বামী পাহাড়ের উপর উঠার জন্য সেখানে আসব, আর আমি আমার স্বামীকে বলব, পাহাড়ের উপর চড়তে আমার কষ্ট হবে, সে বাহানায় তোমার গাধাটি ভাড়ায় নিয়ে আমি সে পাহাড়ের উপর উঠব। তুমি গাধা নিয়ে সেখানে উপস্থিত থাকবে। আর গাধার উপর আমাকে সওয়ার করে আমার সাথে পাহাড়ে উঠবে। যখন দ্বিতীয়  দিন স্বামী স্ত্রী পাহাড়ে উঠার জন্য ঘর থেকে বের হল। চলতে চলতে সে পাহাড়ের নিকট পৌঁছিল।  সেখানে তার প্রেমিক গাধাওয়ালার বেশে আগে থেকেই গাধা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। মহিলাটি তার স্বামীকে বলল আমি চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। আমাকে এ গাধাটি ভাড়া করে দাও।  স্বামী গাধাওয়ালার সাথে ভাড়া ঠিক করে নিল। আর স্ত্রীকে গাধার উপর সওয়ার করে  তিন জনই পাহাড়ে উঠতে লাগল। যখন সে স্থানে পৌঁছল যেখানে মানুষ কসম খেত, সেখানে সে ধোকাবাজ নারী গাধার উপর থেকে পরে গেল। আর সে বাহানায় নিজের কাপড় এমন ভাবে উপরে তুলে ফেলল যেন তার সতর খুলে যায়।  আর এমন ভাবে পড়ল যে স্বামী সত্যি সত্যি মনে করল যে তার স্ত্রী গাধা থেকে পড়ে গেছে।আর এতে অসতর্ক বশত সে বিবস্ত্র হয়ে গেছে। এরপর মহিলাটি দ্রুত উঠে দাঁড়িয়ে গেল আর পাহাড়ের কসম খাওয়ার জায়গায় দাঁড়িয়ে বলল আমি কসম করে বলছি আমার সতর তুমি ছাড়া এবং এ গাধা ওয়ালা ছাড়া আর কেহ দেখে নি। কসম খাওয়ার পর স্বামী স্ত্রীর উপর বিশ্বাস করে নিল। কেননা স্বামী মনে করল এ গাধাওয়ালা এইমাত্র স্ত্রীর যে সতর খুলে গিয়েছিল তখনই দেখেছে। এ ঘটনায় বুঝা যায় নারীরা চালাকির দ্বারা অনেক সময় স্বামীকে বেওকুফ বানিয়ে ফেলতে পারে। কিন্তু সে সব নারীদের এটা জানা নাই যে আজ কোন চালাকির দ্বারা নিজের গুনাহকে সাময়িক গোপন করে নিল, যাতে কারো সন্দেহও সৃষ্টি হল না।কিন্তু কাল কেয়ামতের দিন এ কথা গোপন থাকবে না। কারন আল্লাহর সবকিছুই জানা আছে।আল্লাহর কাছে কোন কাজ লুকানোর নাই। দুনিয়াওয়ালাদের নিকট লুকানো থাকতে পারে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা থেকে গোপন থাকতে পারে না।

কুরআনের ২৪ (সূরা নূর):২-৩ আয়াতে বলা হয়েছে যে, ইসলামী আইনে বিয়ে এবং উপপত্নীত্ব ব্যতীত অন্যান্য যৌন সম্পর্কসমূহ জিনা (ব্যভিচার) হিসেবে নিষিদ্ধ। উক্ত আয়াতসমূহে আরও বলা হয়েছে, অবিবাহিত ব্যভিচারী পুরুষ বা নারীকে একশতটি বেত্রাঘাত প্রদান করতে হবে এবং উক্ত ব্যভিচারী নারী বা পুরুষ অপর ব্যভিচারী পুরুষ বা নারীকেই শুধুমাত্র বিয়ে করতে পারবে; পাশাপাশি বিবাহিত ব্যভিচারী পুরুষ বা নারীকে (পরকীয়া) পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদন্ড দিতে হবে।
হাদিস শরিফে ব্যভিচারের ভয়ানক শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে মুসলমানগণ! তোমরা ব্যভিচার পরিত্যাগ কর। কেননা এর ছয়টি শাস্তি রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি দুনিয়াতে ও তিনটি আখেরাতে প্রকাশ পাবে।
যে তিনটি শাস্তি দুনিয়াতে হয় তা হচ্ছে, তার চেহারার ঔজ্জ্বল্য বিনষ্ট হয়ে যাবে, তার আয়ুষ্কাল সংকীর্ণ হয়ে যাবে এবং তার দারিদ্রতা চিরস্থায়ী হবে। আর যে তিনটি শাস্তি আখেরাতে প্রকাশ পাবে তা হচ্ছে, সে আল্লাহর অসন্তোষ, কঠিন হিসাব ও জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।’ (বায়হাকি, হা নং ৫৬৪)
হাদীসে বর্ণিত রয়েছে, যে ব্যক্তি কোন বিবাহিত মহিলার সাথে ব্যভিচার করবে তাদের উভয়ের উপর মুসলিম উম্মাহর অর্ধেক আযাব নিপতিত হবে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ এ মহিলার স্বামীকে তার সৎ কর্মের বিচারের দায়িত্ব অর্পণ করে জিজ্ঞেস করবেন, তার স্ত্রী যে অপকর্ম করেছে তা সে জানত কিনা ? যদি সে জেনে থাকে তাহলে এ কুকর্ম প্রতিহত করতে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে থাকে তাহলে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দিবেন। কেননা, আল্লাহ জান্নাতের দরজার উপর এ মর্মে লিখে রেখেছেন, দায়ূসের জন্য জান্নার হারাম। দায়ূস হচ্ছে সে ব্যক্তি, যার পরিবারে অনৈতিক কার্যকলাপ চলতে থাকা সত্তে¡ও, সে তা জেনে নীরবতা পালন করে এবং একে প্রতিহত করার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।
যবূর কিতাবে বর্ণিত আছে, “ব্যভিচারী নারী-পুরুষদের রশি দ্বারা বেঁধে জাহান্নামের আগুনে ঝুলানো হবে এবং লোহার ডান্ডা দিয়ে তাদের জননেন্দ্রিয়ে আঘাত করা হবে। আঘাতের যন্ত্রণায় যখন চিৎকার করবে, তখন জাহান্নামের ফেরেশতারা বলবে; পৃথিবীতে যখন তোমরা আনন্দ ফুর্তি করতে, হাসতে এবং আল্লাহর কথা স্মরণ করতে না এবং তাঁকে লজ্জা পেতে না, তখন এ চিৎকার কোথায় ছিল”?

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃইবলীস তার বাহিনীকে পৃথিবীর চারদিকে ছড়িয়ে দেবার সময় বলে, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে সবচেয়ে বেশি বিভ্রান্ত করতে পারবে, আমি তার মাথায় মুকুট পরিয়ে তাকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করব। দিন শেষে এক একজন করে এসে ইবলীসে কাছে নিজের সাফল্যের বর্ণনা দিতে থাকবে। কেউ বলে; আমি অমুককে কুপ্ররোচনা দিয়ে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে প্রেরণা যুগিয়েছি এবং সে তালাক দিয়েছে। ইবলীস বলেঃ “তুমি উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুই করনি। সে আর এক মহিলাকে বিয়ে করবে”। এরপর অন্যজন এসে বলেঃ আমি অমুককে ক্রমাগত কুপ্ররোচনা দিয়ে তার ভাইয়ের সাথে তার শত্রুতা সৃষ্টি করে দিয়েছি। ইবলীস বলেঃ ‘তুমিও তেমন কিছু করনি। তাদের অচিরেই মীমাংসা হয়ে যাবে’। এরপর অপর একজন এসে বলে আমি অমুককে এক নাগাড়ে ক্রমাগত প্ররোচনা দিতে দিতে ব্যভিচারে লিপ্ত করেছি। একথা শুনে ইবলীস তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলবেঃ তুমি একটা কাজের মত উত্তম কাজ করেছ। এরপর তাকে ডেকে নিয়ে তার মাথায় মুকুট পরিয়ে দেবে।

ইসলামী শরীয়তে বিবাহিত ব্যাভিচারের শরয়ী শাস্তি হল, পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা। আর যদি দু’জনই বিবাহিত হয়, তাহলে দুজনেরই শাস্তি হল, পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদন্ড। যাতে সে তার কুকর্মের উপযুক্ত ফলাফল ভোগ করতে পারে।মনে রাখতে হবে, এ শাস্তি কেবল ইসলামী রাষ্ট্রেই দেওয়া যাবে এবং সে দেশের শরীয়া সরকার ইসলামী আইন অনুসারে সেটা প্রয়োগ করবে।
এ বিপর্যয় ঠেকাতে পারে একমাত্র ইসলামের পর্দার বিধান। এর বিকল্প সকল ব্যবস্থা বা প্রেসক্রিপশন হবে ভন্ডুল। পর্দা মূলত নারীর মান সম্মান আর ইজ্জত আবরুর রক্ষা প্রাচীর । নারীর অমূল সম্পদ রক্ষায় পর্দার অপরিহার্যতাকে অনিবার্য কর্তব্য বলে ঘোষণা করেছে ইসলাম।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...