এ শহরের আকাশ ছোঁয়া নড়বড়ে বিল্ডিং হেলে দুলে মাথায় পড়ে। নির্মাণাধীন দালানের ইট, রড মাথায় ধপাস করে পড়ে। রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার মৃদু ভূকম্পনের ঝাঁকুনিতে দালানে চাপা পড়ে মরার আশংকায় থাকি। রুমের ফ্যান হঠাৎ খসে মাথায় পড়ে মাথা থেঁতলে যাবার অজানা ভয়ে থাকি। এ শহরে আকস্মিকভাবে বিল্ডিং ধসে মানুষ চাপা পড়ে। জেব্রা ক্রসিংয়ে রাস্তা পারাপারের সময় দানব আকৃতির কোনো বাহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মরতে হয়। যে বাহনে লেখা থাকে আবার দেখা হবে। নিহত হলে বালাই নেই। কিন্তু আহত হলে আরেকবার পিষিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আতঙ্কে থাকি যদি বাসায় গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ওপারে যেতে হয়। এ যাত্রা যদি হয় বড্ড অসময়ে প্রস্তুতি ছাড়া। হঠাৎ শর্টসার্কিট থেকে আগুনের লেলিহান শিখা এসে জড়িয়ে ধরে মুখ চেপে শেষ নিঃশ্বাস কেড়ে নেয়। ঝলসে দেয় এই রুপের প্রসাধনী মাখা শরীর। বড় আতঙ্কে থাকি। মৃত্যু কখন আসে বলা যায় না। যেভাবে মৃত্যু লেখা আছে সেভাবেই হবে। তবে এসব মৃত্যু যে বড় অসহনীয় বড়ই কষ্টের। যদি জানতাম মালাকুল মাউতের ফিরিশতা আসার প্রহর। তাহলে আগেভাগেই কিছু আমল আখলাক করে হাত পা ছেড়ে বসে থাকতাম। সেই সম্মানিত ফিরিশতার জন্য। গুছিয়ে রাখতাম মাল সামানা সব ওপারের যাত্রার জন্য । আত্মীয় স্বজন পড়শীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বিদায় নিতাম। সেই সুযোগ নেই। মৃত্যুর ঘন্টা বাজলে কোনো ফুরসত নেই এসবের। ওপারে যেতেই হবে। ইচ্ছা অনিচ্ছার কোনো দাম নেই। ধর্মের বিশ্বাসীরা, অনুশীলনকারীদের তো মৃতুর ভয় নেই। তবুও অপঘাতে মৃতু যে বড়ই কষ্টের বড়ই নিদারুণ, মর্মন্তুদ ও বেদনার। মাঝে মধ্যে এইসকিলাসের মত ইচ্ছে করে জানতে মৃত্যু আমার কেমনে আছে? কোনো গনকের শরনাপন্ন হয়ে জানতে ইচ্ছে করে আমার মৃত্যু কোথায় সাগরে সলিল সমাধি হয়ে? না এই অদ্ভুত দানবীয় শহরের কোন দালানে আগুনে ভস্ম হয়ে। কিন্তু ইহা আগেভাগে জানার আগ্রহ ও বিশ্বাস যে পাপ। তাই নিজেকে নিবৃত্ত রাখি। যেখানেই হোক মৃত্যুর জন্য সদা প্রস্তুত রই। জলে স্থলে যেখানেই হোক। শেষ করি গ্রিক ট্রাজেডি সাহিত্যের জনক এইসকিলাসের মৃত্যুর করুণ গল্প দিয়ে।
এইসকিলাসকে দেখে এক সাধু ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন “তুমি সাগরের ঝাপ্টায় মারা যাবে”! এই বাণীর কারণেই তিনি সবসময়ই কোনো নাটকীয় মৃত্যুর অপেক্ষা করতেন, হয়ত জলোচ্ছাসের আঘাতে ভাঙ্গা বাড়ির নিচে চাপা পড়ে মরবেন এরকম কিছুই তার আশঙ্কা ছিল। তবে তার মৃত্যুর কারণটাও যে এর চেয়েও নাটকীয় ছিল তা কে জানত?
এইসকিলাস যখন সিসিলিতে অবস্থান করেছিলেন, তখন এক ঈগল মুখ থেকে কচ্ছপ ফেলে দেয়। এরকম ঈগলের অভ্যাস হলো মুখে কচ্ছপ নিয়ে কোনো পাথরের উপর ছুড়ে মারা যাতে কচ্ছপের খোলস ভেঙে যায়। এইসকিলাসের চকচকে টাক দেখে ঈগলটি ভেবেছিল হয়ত এটি কোনো পাথরই হবে! শেষমেশ কচ্ছপের খোলস ফাটার বদলে এইসকিলাসের মাথাটাই ফেটে একাকার হয়ে যায়!
এই শহরে সেরকম সাধু নেই। ভবিষ্যতবক্তাও নেই। আছে কিছু ঠগ অসৎ আদমীর আনাগোনা। ঈগলের আনাগোনো না থাকলেও চকচকে টেকো মাথার অভাব নেই। অভাব নেই মাথায় ভেঙ্গে পড়ার মতো আকাশচুম্বী বিল্ডিংয়ের। যেভাবেই মরি অপঘাতে মরণ যে বড়ই করুণ ও বিয়োগান্তক। কিন্তু জানি তো সাবধানের মার নেই। কুরআন বলে প্রত্যেক প্রাণী কে মৃতুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। তবে নিস্তার কোথায়? নিয়তির খেলা মেনে নিতে হবে। কিন্তু এ হযবরল, অব্যবস্থাপনায় অপমৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। আবার ঈগলের ভয়ে এসব দানবের কার্যে নিরব থাকা যায় না। চাই না নিশ্চল জীবন।চাই আতঙ্ক মুক্ত বাসযোগ্য স্বপ্নের শহর।
মো.আবু রায়হান: কিয়ামত সংঘটিত হবার পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে। আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে। ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন