জেনেটিকালি মুসলিম হওয়া যায় না
জেনেটিকালি শাকসবজি উৎপাদন ও অন্যান্য বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সম্ভব। কিন্তু বাবা মুসলিম সেই হিসেবে জেনেটিকালি আমিও মুসলিম হবো তা কিন্তু সব সময় সম্ভব নয়। আপনি বংশ ধারায় বাবা মার জিনগত বৈশিষ্ট্য পেতে পারেন কিন্তু তার বিশ্বাস ও ধর্ম আপনাকে নাও প্রভাবিত করতে পারে। আবার আপনি আপনার পিতা মাতার চেয়ে বেশি ধার্মিক ও সংস্কৃতিমনা হতে পারেন শুধু বিশ্বাস ও আমল দিয়ে। জেনেটিকালি ধর্ম কারো ওপর প্রভাব ফেলে না। এটি একান্ত নিজের অর্জন। যেমন বলা হয়ে থাকে -
" তরুলতা সহজেই তরুলতা, পশুপক্ষী সহজেই পশুপক্ষী, কিন্তু মানুষ প্রাণপণ চেষ্টায় তবে মানুষ'
তেমনি বাবা মুসলিম হলেই আপনি মুসলিম ঘটনা এমনটি না এটি সম্পূর্ণ আপনার জ্ঞান ও মেধার ওপর নির্ভর করে। কোনটি সত্য ও শাশ্বত তা গ্রহণের ওপর। তবে মুসলিম ঘরে জন্ম গ্রহণ আপনার জন্য অবশ্যই প্লাস পয়েন্ট। একধাপ এগিয়ে গেলেন। কিন্তু কোনো অমুসলিম ইসলাম কবুল করলে তারও সুযোগ আছে। হাদিস শরিফে এসেছে, 'ইসলাম গ্রহণ আগের সব পাপ মোচন করে দেয়। হিজরত আগের সব পাপ মোচন করে দেয়। হজ আগের সব পাপ মোচন করে দেয়।' (মুসলিম শরিফ : হা. ১২১)
হাজিব ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ প্রতিটি নবজাতক স্বভাবজাত ইসলাম নিয়ে জন্মলাভ করে। অতঃপর তার বাবা-মা তাকে ইয়াহুদী বানিয়ে দেয়, খ্ৰীষ্টান বানিয়ে দেয় এবং আগুনপূজারী বানিয়ে দেয়, যেমন চতুষ্পদ প্রাণী পূর্ণাঙ্গ চতুষ্পদ বাচ্চা জন্ম দেয় তোমরা কি তাতে কোন অঙ্গ কর্তিত বাচ্চা উপলব্ধি করছ? তারপর আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) বললেন, ইচ্ছা করলে তোমরা এ আয়াতটি পাঠ করতে পার, “আল্লাহর ফিতরাতে যার উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই*- (সূরা আর রূম ৩০ঃ ৩০)।
ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু আবু জেহেল সে মুসলিম হবার সৌভাগ্য অর্জন করেনি কিন্তু তার ছেলে হযরত ইকরামা (রা.) ছিলেন ইসলামের একনিষ্ঠ খাদেম ও প্রাণ উৎসর্গকারী। তেমনি হযরত নুহ (আ.) ছিলেন একজন নবী তার ছেলে কেনান ছিলেন অবিশ্বাসী। সুতরাং বলা যায় মুসলমানের ঘরে জন্ম নিলেই মুসলিম হওয়া যায় না আবার অমুসলিমের ঘরে জন্ম নিয়েও খাঁটি মুসলিম হতে পারা যায়। শুধু জেনেটিকালি মুসলিম হওয়া যায় না। আল্লাহ আমাদের খাঁটি মুসলিম হিসেবে কবুল করুন। আমিন।
"হে বিশ্বাসীগণ তোমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় কর এবং তোমরা মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করোনা।" (সুরা আল ইমরান -১০২)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন