বালিশ বৃত্তান্ত
বালিশ নিয়ে চারিদিকে চলছে তুমুল হৈচৈ। এ নিয়ে আমরা বসে থাকবো কেন?বালিশের সুন্দর বাংলা প্রতিশব্দ গুচ্ছ হলো উপাধান,শিরোধান।
এদিকে শিমু গুনগুন করে গেয়ে যাচ্ছে -
এক বালিশে দুইটি মাথা
মিষ্টি করে কওনা কথা,
.....
রোজার মাস বলে এখানেই থেমে গেল শিমু। এরমধ্যে রুমে স্বামী রাহাতের অাগমন।
রাহাত তার স্ত্রী শিমুকে পেটানোর ইচ্ছা হয়েছে, কিন্তু শিমুর কোন দোষ পাচ্ছে না। সে অনেক ভেবেও শিমুর কোন দোষ পায় না। হঠাৎ রাহাত বাহির থেকে এসে দেখে বাড়ির উঠানে একটি কুকুর শুয়ে আছে। সে এটা দেখে আর দেরি না করে দ্রুত ঘরে ঢুকে শিমুকে পেটাতে থাকে।শিমু
আমারে মারতাছ ক্যান? আমি কি করছি?
রাহাত : ওই নবাবজাদি বাহিরে এতক্ষণ ধইরা কুত্তা শুইয়া রইছে, তুই বালিশ দেস নাই ক্যান??
এবার চিৎকার করে শিমু কাঁদতে থাকে। বলে হায়রে বালিশ তোর জন্য আমার আজ মাইর খেতে হলো
রাহাত শিমুর কাছে এসে তার হাতটা ধরে বলল সরি।
শিমু হাতটা জোর করে ছেড়ে নিয়ে বলল ছাড়ো। রমজান মাস আর ভণিতা করতে হবে না।
রাহাত বলল বালিশ নিয়ে খুব ইন্টারেস্টিং কাহিনী আছে। শুনবে?এবার শিমু বলল বলো।
রাহাত :ধন্যবাদ। বালিশ ইংরেজি পিলো শব্দ হতে এসেছে। মধ্যযুগের ইংলিশ পিলইউ থেকে, যার উৎস প্রাচীন ইংরেজি শব্দ পাইল (প্রাচিন জার্মান ফুলউইর সদৃশ্য) থেকে এবং ল্যাটিন পালভিনাস থেকে। ১২তম শতাব্দীর আগে পিলো শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল বলে জানা যায়।
বিছানা, সোফা অথবা চেয়ারে ব্যবহৃত বালিশ কুশন নামে পরিচিত
শিমু :হইছে এবার রাখো যাও গা কুত্তার মাথায় বালিশ দিয়ে এসো।
রাহাত : দূর!! কুত্তা কি আছে তোমার কান্নার শব্দে পলাইছে না।
শিমু : তাইলে নিজের মাথায় বালিশ দিয়ে শুয়ে থাকো।
রাহাত :আমার ঘুম নেই। আরেকটু শোনো।
শিমু আচ্ছা বলো।
রাহাত এবার বালিশের ইতিহাস শুরু করল ৭০০০ অব্দে প্রাচীন মেসোপ্টেমিয়ায় বসবাসকারী লোকেরা প্রথম বালিশ ব্যবহার প্রচলন করেছিল।এই সময়ে কেবল ধনীরাই বালিশ ব্যবহার করতো। বালিশের সংখ্যা মর্যাদার প্রতীক ছিল,সুতরাং একজনের যতবেশী বালিশ থাকতো সে তত বেশী সমৃদ্ধ বলে ধরা হতো। ঘুমানোর সময় মানুষের চুল,মুখ,নাক এবং কান থেকে পোকামাকড়কে দূরে রাখতেও বালিশ ব্যবহৃত হতো।
শিমু : বেশ হয়েছে এবার রাখো।যাওগে আরো বালিশ আনো।
রাহাত : কেন?
শিমু : যত বালিশ তত সমৃদ্ধ না। আজ থেকে বালিশ খেয়ে থাকবে ভাত না।আজাইরা যতসব
রাহাত : আরে দূর আমরা তো দুজন মাত্র। কয়টা বালিশ লাগে?
শিমু: সাত সকালে আজ বালিশ নিয়ে লাগলে কেন?
রাহাত: আরো কাহিনী আছে তো।
শিমু: চুলায় ভাত বসানো।তোমার কাহিনী শুনলে পেট ভরবে না।
রাহাত : নাছোড়বান্দা, শুনিয়েই ছাড়বে। এবার শক্ত করে শিমুর হাত ধরে বলল। মজার কাহিনি ঘটছে বাংলাদেশে। বলে সকালের পত্রিকাটা নিয়ে পড়তে আরম্ভ করল।আসবাবপত্র ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র কেনা ও ফ্ল্যাটে তুলতে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে।
শিমু : তো? আদার বেপারী হয়ে জাহাজের খোঁজ নিয়ে কি লাভ?
রাহাত এবার খানিকটা উত্তেজিত হয়ে এজন্যই তো বাঙালির উন্নতি হয়না।
শিমু :এবার কিছুটা শান্ত গলায় বলল কি হইছে বলবা তো!
রাহাত: দিলে তো মুডটা নষ্ট করে।
শিমু :আচ্ছা এবার বলো।
রাহাত এবার গম্ভীরভাবে বলল ওখানে ৬হাজার টাকার এক বালিশ ফ্ল্যাটে তুলতে খরচ হয়েছে ৭৬০ টাকা!
শিমু: কি বলছো? সত্যি বলছো?হায়রে আমার দেশ। এদেশে বর্গী এলো কবে?
রাহাত : হুম আলবত সত্য।
শিমু : আচ্ছা এবার যাই।
রাহাত: যাও। বুঝছি তোমার জন্য নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি আনতে হবে। বালিশ মিষ্টি না খেলে তোমার মাথা খুলবে না।
শিমু আমার মাথা খোলার প্রয়োজন নেই। তোমার মাথা খোলো। বলে বেরিয়ে গেল শিমু।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন