সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ব্যথিত হই

সবাই যখন বলে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি কিন্তু সর্বত্র যখন চলে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা তখন খেই হারিয়ে ফেলি। যখন পত্রিকা নিয়ে বসি তখন হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ি। ফেসবুকের নিউজ ফিডে তো চোখ বুলানো যায় না।ভাবি নো নিউজ ইজ গুড নিউজ।  চারিদিকে শুধু খুন ধর্ষণের ছড়াছড়ির খবর। দুর্নীতি ঘুষ বাণিজ্য তারুণ্যের হতাশা। গত পনরো দিনে শেয়ারবাজারের আনুমানিক ২৫হাজার কোটি টাকা লোপাট। জানি না বরাতের রাতে কার রাতারাতি অাঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার ভাগ্য লিখন হয়েছে। কে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে রাস্তায় বসছেন। ঋণখেলাপিরা ঋণ নিয়ে এখন ঋণ মমওকুফের আশায় প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন। দৃশ্যমান দুএকটি পদ্মা সেতু, ফ্লাইওভার ব্রিজ দিয়ে কি এসব অপকর্ম ঢেকে রাখা যাবে?
এইচএসসি পরীক্ষার দায়িত্ব পালন কালে শিক্ষার্থী যখন বলে স্যার একটু সুযোগ দেন তখন। লজ্জায় মাথা হেট হয়ে আসে।চিৎকার চেঁচামেচি করি। এ পর্যন্তই। কারণ শিক্ষকরা এখন আহত বাঘ। ভবিষ্যতে প্রজন্মের এসব সোনার ছেলেদের কিছু বলার নেই। নিরবে সব সহ্য করতে হয়। ধমক দিয়েই তাদের নিবৃত্ত করার ব্যর্থ প্রয়াস চালাতে হয়।
সপ্তাহ তিনেক আগে একটি চাকরির পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলাম। পরীক্ষার হলে এক তরুণ কানের কাছে এসে বলল স্যার আমি অমুক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি।শোনে চুপ রইলাম। যথারীতি পরীক্ষা শুরু হলো সেই ছেলের অন্যায্য দাবি এবং আশেপাশে ডিসটারব করতে লাগলো।এমন আচরণ  আমার ভালো লাগেনি। কয়েকবার সতর্ক করেছি কিন্তু কখনো একটু শান্ত পরক্ষণেই আবার অস্থির হয়েছে। সে পরীক্ষা কেমন দিয়েছে তা জানি না। তবে খুব সুবিধের যে হয়নি তা পরে বুঝতে পেরেছি। পরীক্ষা শেষে আমার নাম জিজ্ঞেস করে। অমুককে চিনি কি না? কত কি। বললাম চৌদ্দ গোষ্ঠী চিনি। এবার বলে স্যার কয়েকটি উত্তর ফাঁকা রাখছি একটু পূরণ করে দিয়েন। এবার মেজাজ তো চরমে। কত বড় সাহস তার। কিছু করার নেই। কারণ আমার মতো কোনো শিক্ষকই এতদিন আশকারা দিয়ে আসছে। যে কারণে এত বড় আস্ফালন করার সাহস সে পেয়েছে। নিজেকে খানিকটা কনট্রোল করে। একটু ওয়াজ নসীহত করে তাকে ছেড়ে দিলাম। পরে ভাবনার জগতে আবোলতাবোল অনেক কিছুই ভীর করেছিল। বর্তমান আমাদের এ অবক্ষয়ে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হলো। এটুকু বোধোদয় হলো একটু পোস্ট পদবী পেলেই আমরা ধরাকে সরা জ্ঞান করি। নিজের ক্ষমতার দাপটে থাকি। নিজে নেতা পাতিনেতা হয়ে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। সুযোগ সুবিধা হাসিলে অস্থির হয়ে উঠি। যেমন অস্থির হয়ে উঠেছিল রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় ফেনির সিরাজউদ্দৌলা। ক্ষমতার কাছে থেকে সব কিছু উপভোগ করেছে।এদেশে আজ কয়জন সাধারণ মানুষ বড় ধরনের অপরাধে জড়িত? বাংলাদেশের বড় বড় অপরাধ গুলো করে অধিকাংশ রাজনীতি সংশিষ্ট নেতা পাতিনেতা কর্মীরা । সাধারণ জনগণের ভেতর আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ অনেক বেশি। সাধারণ জনগণ একটি অপরাধ করতে হাজার বার ভাবেন।কিন্তু রাজনৈতিক পদ পদবীপ্রাপ্ত নেতা, পাতি নেতা ও কর্মীদের কাছ অপরাধ করাটা যেন মামুলী ব্যাপার। অপরাধ করে সহজে পার পাবার জন্য তারা রাজনৈতিক পরিচয়কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন।বাঁচতে জোরেশোরে তদবিরও করেন।অনেকে ফাঁক ফোকর তদবিরে বেঁচেও যান।কিন্তু ভিকটিমদের অভিশাপ কখনো দের পিছু ছাড়ে না। আসুন নোংরা এ জাতি বিধ্বংসী  অপসংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসি। সত্যিকার সোনার বাংলা বিনির্মাণে হই নিবেদিত প্রাণ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...