পোস্টগুলি

করোনার সময়ে মুসাফা বা করমর্দন

ছবি
দেখা হলে মুসাফা বা করমর্দন করা একটি ইসলামী রীতি নীতি। এটি মুসাফাকারী ব্যক্তিদ্বয়ের মাঝে ভালবাসা ও হৃদ্যতার বহিঃপ্রকাশ। অন্যদিকে এটি মুসলমানদের পারস্পারিক হিংসা-বিদ্বেষ ও কলহ দূর করে দেয়। কিন্তু করোনা এসে অনেক কিছু পালটে দিয়েছে। পালটে দিয়েছে হাত করমর্দনের দীর্ঘ ইতিহাস ঐতিহ্যের। খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে করমর্দন শুরু হয়েছিল শান্তি স্থাপনের সংকেত হিসেবে—এর মাধ্যমে বোঝানো হতো, দুজনের কারও হাতেই কোনো অস্ত্র নেই। রোমান সভ্যতায় হাত মেলানোর পরিসর ছিল আরেকটু বড়। পরস্পরের সঙ্গে বাহু মিলিয়ে সম্ভাষণ করত তারা। উদ্দেশ্য একই—জামার আস্তিনের নিচে কোনো অস্ত্র লুকানো নেই, তা জানান দেওয়া। করমর্দনের রীতি বহুল প্রচলিত হলেও সব দেশে যে একই নিয়ম, তা নয়। নিউজিল্যান্ডের মাওরি জনগোষ্ঠী যেমন নাকে নাক ছুঁইয়ে পরস্পরকে সম্ভাষণ জানান। ইথিওপিয়ার মানুষ কাঁধে কাঁধ ছোঁয়ান। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর পুরুষেরা একে অপরের কপালে কপাল ছুঁয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তবে জাপানের মতো এশিয়ার কিছু কিছু দেশের সম্ভাষণরীতি আগে থেকেই বেশ ‘স্বাস্থ্যসম্মত’—হালকা মাথা নুইয়ে অভিবাদন জানান তাঁরা। ইউরোপের কিছু কিছু দেশে গালে চুমু খাওয়াও ...

কতটুকু জমি দরকার ?

ছবি
#মো.আবু রায়হান বিখ্যাত রুশ সাহিত্যিক লিও টলস্টয় রচনা করেন গল্প ‘হাউ মাচ ল্যান্ড ডাজ এ ম্যান নীড?’ বা ‘কতটুকু জমি দরকার?’ গল্পটি ১৮৮৬ সালে রচনা করেন তিনি। গল্পটি রাশিয়ার এক লোভী লোক পাহমকে নিয়ে। যার জমি কেনার দিকে ঝোঁক বেশি। কারো কাছে জমির কথা শুনলেই তার চোখ চকচক করে উঠে। কম দামে জমি বিক্রি হলে তিনি তা কিনতে মরিয়া হয়ে পড়েন। পাশের দেশে অনেক কম দামে জমি পাওয়া যায় । এটা জেনেই ছুটলেন সেখানে জমি কিনতে ।তিনি টাকা জমা দেন এবং জমা দেওয়া টাকার বিনিময়ে কি পরিমাণ জমি তিনি পেতে পারেন - তা জানতে চান । তারা জানান, জমির পরিমাণ ঠিক হয় সূর্যের অবস্থানের সময় ধরে হাঁটার পরিমাণ অনুযায়ী । তাঁর ক্ষেত্রে সূর্যোদয়ের পূর্ব মুহূর্ত থেকে সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত হেঁটে তিনি যে পরিমাণ জমির সীমানা নির্ধারণ করতে পারবেন – সেই পরিমাণ পুরো জমির মালিক হবেন তিনি । এ কথা শুনে ভদ্রলোকের অজ্ঞান হওয়ার অবস্থা । তিনি অনেক দ্রুত হাঁটতে পারেন । ফলে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হওয়া এখন তাঁর একদিনের ব্যাপার মাত্র । এসব চিন্তায় রাতে ঠিকমত ঘুম হয় না তাঁর । ভোরে বলা যায়, একেবারে না খেয়েই তিনি তাঁর সীমানা নির্ধারণী স্থ...

কুরআনের সুরের পাখি নূরীন মুহাম্মদ সিদ্দিক

ছবি
#মো. আবু রায়হান আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) আমাকে বলেছেন, আমাকে তুমি তিলাওয়াত করে শোনাও। বললাম, আমি আপনাকে তিলাওয়াত শোনাব, অথচ আপনার ওপরই এটি অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি বলেন, আমি অন্যের তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করি। অতঃপর আমি তাঁকে সুরা নিসা পড়ে শোনাতে লাগলাম। যখন আমি সুরা নিসার ৪১ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করলাম, তিনি বললেন, ব্যস, যথেষ্ট হয়েছে। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম তাঁর চোখ থেকে অঝোর ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে। (বুখারি, হাদিস : ৫০৫০; মুসলিম, হাদিস : ১৯০৩) বিশ্বের একেক অঞ্চলে একেক ধরনে কুরআন তেলাওয়াত করা হয়। তার মধ্যে আফ্রিকান ধরন অনন্য।মধ্যপ্রাচ্যের বাইরেও এই বিশাল মুসলিম বিশ্বের ভৌগোলিক অবস্থান, সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা অনুসারে এই তেলাওয়াতের ভিন্নতা থাকে। সেই ভিন্নতা স্বরে, সুরে ও ধরনে। নূরীন মুহাম্মদসিদ্দিক গত শতাব্দীতে ৯০-এর দশকে আফ্রিকার মুসলিম দেশ সুদানের খার্তুমের পশ্চিমে আল-ফারাজাব গ্রামের একটি মাদ্রাসায় কুরআন তেলাওয়াত শুরু করেন।পরে যখন রাজধানী খার্তুমে চলে আসেন, শহরের কয়েকটি বড় বড় মসজিদের নামাজে তিনি ইমামতি করেছেন এবং সেসময় তিনি মানু...

ট্রাম্পের মিথ্যার রেকর্ড ও মিথ্যাবাদী শাসক

চার বছরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ৩০ হাজার ৫৭৩টি মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর কথা বলেছেন।২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার হিসাব অনুযায়ী। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘মিথ্যা তো তারাই বানায়, যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের ওপর ঈমান রাখে না। বস্তুত তারাই মিথ্যুক। (সুরা নাহাল, আয়াত: ১০৫) হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তির সঙ্গে আল্লাহ পরকালে কথা বলবেন না এবং তাদের পবিত্রও করবেন না। তাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি। তারা হলো ব্যভিচারী বৃদ্ধ, মিথ্যাবাদী শাসক ও অহংকারী দরিদ্র।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১০৭) আল বিরুনির মতে, কিছু মানুষ রয়েছে যারা মিথ্যাচার করে কেবল সমাজে হানাহানি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য। নিজের অন্তরের লুকায়িত ক্ষোভ-বিক্ষোভ, হিংসা-বিদ্বেষ প্রভৃতির কারণেও মানুষ মিথ্যাচার করে। অনেকে নিজেকে বড় করার জন্য এবং অন্যকে ছোট করার জন্য অনবরত মিথ্যা বলে থাকেন। কিছু মানুষ রয়েছে, যারা হাতিয়ার দিয়ে আঘাত করে তার প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করার ক্ষমতা রাখে না। তখন তারা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা প্রচার করে নিজেদের জিঘাংসামূলক মনোবৃত্তি চরিতার্থ করার অপচেষ্টা চা...

পরকীয়া কি কেন ও ইসলাম কি বলে ?

ছবি
#মো. আবু রায়হান স্ত্রী হলো স্বামীর আমানত স্বরুপ। যে স্ত্রী স্বামীর ঘরে থাকাবস্থায় আরেকটি পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক করে অতঃপর প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় পুরুষের কাছে গেল সুষ্পষ্টভাবে সে আমানতের খেয়ানত ও বিশ্বাস ভঙ্গ করল। এটির উদাহরণ পরজীবী প্রাণীর মতো যে অন্যের দেহে বসবাস করে আশ্রয়দাতাকে খেয়ে পুষ্ট হয়। ইসলাম নারীকে তালাকের অধিকার দেয়নি, কিন্তু তালাকের যে মূল উদ্দেশ্য বিবাহবিচ্ছেদ, তার অধিকার দিয়েছে। অর্থাৎ কোনো কারণে নারী চাইলে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানোর বিভিন্ন সুযোগ রয়েছে। ইসলামে নারীদের আটকে রাখা হয়নি, বরং তারাও প্রয়োজনে যথাবিহিত নিয়মে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারে। স্বামী নপুংসক, পাগল, অস্বাভাবিক ক্রোধসম্পন্ন হলে কোনোক্রমেই মনের মিল না হলে বা নিখোঁজ হয়ে গেলে অথবা যেকোনো কঠিন সমস্যায় পতিত হলে স্ত্রী বিচারকের মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ করিয়ে নিতে পারবে। (শরহুস সগির, দরদির : ২/৭৪৫, কিফায়াতুল মুফতি : ৬/২৫২)। কিন্তু স্বামীর ঘরে থেকে পরপুরুষে আসক্তি, পরকীয়া কখনো কাম্য হতে পারে না। স্বামীর সঙ্গে জটিল কোনো সমস্যা হলে তাকে তালাক দিয়ে অন্য পুরুষের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে সমস্যা নেই। কিন্তু স্বামীকে ...

কেন ভালোবাসা দিবস পালন নয়

ছবি
#মো. আবু রায়হান ১৪ ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বের তরুণ তরুণীরা জাকজমকপূর্ণভাবে ভালোবাসা দিবসের নামে নোংরামি ও বেহায়াপনা করে থাকে। কিন্তু দিবসটির ইতিহাস ও উদযাপন পদ্ধতি ইসলামের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও সাংঘর্ষিক। এ দিবসটি মুসলমানদের জন্য পালন করা নিষিদ্ধ । কেননা - এক. এটি একটি বিদআতি উৎসব; শরিয়তে এর কোন ভিত্তি নেই। দুই. এটি মানুষকে অবৈধ প্রেম ও ভালবাসার দিকে আহ্বান করে। তিন. এ ধরনের উৎসব মানুষের মনকে সলফে সালেহিনদের আদর্শের পরিপন্থী অনর্থক কাজে ব্যতিব্যস্ত রাখে। সুতরাং এ দিনের কোন একটি নিদর্শন ফুটিয়ে তোলা জায়েয হবে না। সে নিদর্শন খাবার-পানীয়, পোশাকাদি, উপহার-উপঢৌকন ইত্যাদি যে কোন কিছুর সাথে সংশ্লিষ্ট হোক না কেন। https://thedailycampus.com/.../%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6... আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেছেন, ‘আল্লাহর কুদরতের মধ্যে অন্যতম একটি নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকে তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাকো এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও অনুগ্রহ সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে।’ (সূরা আর রুম : ২১)।ভালোবাসা হলো খ...

ভি চিহ্ন নয় চার আঙ্গুল প্রদর্শন

ছবি
সাধারণত ‘ভি-চিহ্ন’কে ‘বিজয় চিহ্ন’ বলে ধরে নেয়া হয়। ভি-চিহ্ন’র ব্যবহার শুরু হয় ১৪১৫ সালে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে শতবর্ষী যুদ্ধে। ওই সময় ফ্রান্সের সৈন্যরা ইংরেজদের ধরে তাদের মধ্যমা ও তর্জনি কেটে দিতে শুরু করে। পরে ইংরেজরা নিজেদের শক্তিমত্তা দেখাতে ওই দু’টি আঙ্গুল উপরে তুলে ধরে ‘ভি-চিহ্ন’ দেখাতে শুরু করে। তারা ‘ভি-চিহ্ন’ দেখানোর মধ্য দিয়ে ফ্রান্সকে বোঝানোর চেষ্টা করতো, এখনো তাদের আঙ্গুল রয়েছে, যা দিয়ে তারা যুদ্ধে জয়ী হবে।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনী বিজয়ের প্রতীক হিসেবে এ চিহ্নটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। ষাটের দশকে প্রতি-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে (কাউন্টার কালচার মুভমেন্ট) ‘ভি-চিহ্ন’কে শান্তির প্রতীক হিসেবে দেখানো হতো। মুসলিমরা তাদের বিজয় উদযাপন হিসেবে চার আঙ্গুল প্রদর্শন করে। নিম্নের আয়াত স্মরণে, ....নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুন কারিব’ অর্থাৎ আল্লাহর সাহায্য ও আসন্ন বিজয়। (সুরা সাফ আয়াত-১৩)। এর অর্থ শত্রুদের উপর বিজয় লাভ। এখানে قَرِيبٌ (বা নিকট) শব্দটি আখেরাতের বিপরীতে ধরা হলে ইসলামের সকল বিজয়ই এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উপরিউক্ত আয়াতাংশের.....নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুন কা...