পোস্টগুলি

ইতিহাসের শিক্ষা ও সমকামিতা

ছবি
মো.আবু রায়হান :  ইতিহাসের চরম রূঢ় বাস্তবতা হলো ইতিহাস থেকে আমরা কেউ শিক্ষা নেই না। যদি শিক্ষা নিতে পারতাম তাহলে পৃথিবীর রূপ এতো বীভৎস ও কদর্যতা হতো না। হতো না হরহামেশাই মানবাধিকার লংঘনের মতো জঘন্য অপরাধ। সাম্য শান্তিতে ভরে উঠতো বসুন্ধরা। প্রাচীনকালে সমকামিতার মতো জঘন্যতম পাপে ধবংস হয়েছে জনপদ। যে জনপদ এখন ডেডসি বা মৃত সাগর নামে পরিচিত। এ ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারিনি যে কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সমকামিতাকে এখনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট কয়েক বছর আগে সমকামিতাকে বৈধতা দিয়ে ইতিহাসকে দারুণভাবে চপেটাঘাত করেছে। মানবতার সুশৃঙ্খল জীবনকে পাশ্চাত্য বিশ্ব দিনদিন দুর্বিষহ করে তুলছে। স্রষ্টা প্রদত্ত কোনো নিয়ম পদ্ধতি তাদের আকৃষ্ট করছে না। ফলে নিজস্ব ধ্যান ধারণার ও বিকৃত রুচির মনমানসিকতাকে সমাজে ঠাঁই দিয়ে পাপাচার নোংরামিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে। চারিত্রিক স্খলন, বিকৃত রুচি ও বিকারগ্রস্ত মনমানসিকতা ছাড়া এধরনের অনৈতিক কার্যের অনুমতি কোনো সভ্য জাতি দিতে পারে না। ২০১৯ সালের হিসেব অনুযায়ী, ২৮টি দেশ সমকামি বিয়েকে স্বীকৃতি দিয়েছে, দেশগুলো হল-আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলি

বিশ্বজিৎ থেকে রিফাত

যে মৃত্যুর কথা গুলো মনে পড়লে কিংবা ভাইরাল হওয়া  ভিডিও সামনে ভেসে উঠলে এখনো শরীরটা ভয়ে শিউরে উঠে মনটা খারাপ হয়ে যায়।গতকালের বরগুনার রিফাত নামের একজন যুবককে কুপিয়ে হত্যার ভিডিও তেমনি  একটি। কি নির্মম পাশবিকতা! হায়েনার পৈশাচিকতাকেও যেন হার মানায়।চীনা দার্শনিক কনফুসিয়াস বলেন। “মানবজাতি জানোয়ারদের থেকে খুব সামান্যই আলাদা হয়ে থাকে, কিন্তু অনেক মানুষ সেই সামান্যটুকুও নিজের মন থেকে বার করে দেয়” – আমরা নিজেরদের আশরাফুল মাখলুকাত পরিচয় দেই। সেই লকব কি এই মনুষ্য জাতির জন্য এখন উপযোগী?  আমরা বনের জন্তু জানোয়ারের চেয়ে অধম ও হিংস্র হয়ে গেছি। মনে হয় এখন আমাদের লকব হওয়া উচিত আশরাফুল জানোয়ার।কি এ কথায় ব্যথা পেলেন? মনে কষ্ট নেবেন না। আমাদের দেশে এখন জনসংখ্যা বাড়ে সেই ভাবে মানুষ মনুষ্যত্ববোধ আমাদের বৃদ্ধি পায়নি ।শরৎচন্দ্রের একটি কথা মনে পড়ে গেল"মানুষের মৃত্যু আমাকে যতোটুকু কষ্ট দেয় তার চেয়ে বেশী কষ্ট দেয় মনুষ্যত্বের মৃত্যু"। আজ আমাদের সত্যিকার মনুষ্যত্বের মৃত্যু ঘটেছে। তা না হলে এতো বড় ভয়ংকর ঘটনায়ও আমরা নিরব! মনুষ্যত্বববোধ, মনুষ্যত্বের বিকাশ ও মনুষ্যত্বের কার্যকর উপস্থিতির মধ্যেই ‘মানু

আজ পলাশীর ট্রাজেডি দিবস- যেখানে হারিয়েছি স্বাধীনতা

ছবি
মো.আবু রায়হান:বাংলার আকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা। কে তাকে আশা দেবে, কে তাকে ভরসা দেবে। এমন কেউ কি আছে, যে বলবে আশা নয় দূর আশা।দেশের ভেতর ও বাইরের শতমুখী ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়ে বাংলা-বিহার ও উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন  নবাব সিরাজউদ্দৌলা অসহায় হয়ে বলেছিলেন একথা। যা নবাব সিরাজউদ্দৌলা সিনেমায় অনেকে শুনে ও দেখে থাকবেন। ২৩ জুন ১৭৫৭ সাল।  দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার।এদিনটি  অন্যসব দিনের চেয়ে ছিল কিছুটা আলাদা। ২৬৩ বছর আগে এ দিনে ভাগিরথী নদীর তীরে পলাশীর আম্রকাননে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যাসহ পুরো উপমহাদেশের স্বাধীনতার কবর রচিত হয়েছিল।সিরাজের নানা আলীবর্দী খান ইন্তেকাল করেন ১৭৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ৯ এপ্রিল। নানা নবাব আলীবর্দী খানের মৃত্যুতে বাংলার মসনদে আরোহণ করেন  নবাব সিরাজউদ্দৌলা। সিরাজউদ্দৌলার বয়স তখন মাত্র ২২ বছর।ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েই নবাব দেখেন চারিদিকে  দেশীয় বণিক, বিশ্বাসঘাতক ও ইংরেজ বেনিয়াদের চক্রান্ত।যার পরিণতিতে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে স্বাধীন বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা  ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পরাস্ত হন। ফলে ১৯০ বছরের জন্য বাংলা স্বা

নারী

কবিতা নারী নারীকে কে বলে অবলা! ওরে অবুঝের দল নারীর আছে শক্তি সাহস বিপ্লবী হবার বল। প্রীতিলতা ইলামিত্র ইতিহাসের বিপ্লবী নারী অধিকার আদায়ে দিয়েছ দুর্গম পথ পাড়ি। নারী হয়েছে পুরুষের সঙ্গী দৃঢ় মনোবল সেই নারীর ছলনায় কত জীবন বিফল। নারীর ছলনায় পুরষ হারিয়েছে রাজ্য সিংহাসন পথের ধুলোয় লুটিয়েছে,  জোটেনি খাদ্য বসন। নারীর ছলনায় কত পুরুষ হয়েছে ফেরারী বৈরাগ্য সাধনে পথে পথে ঘোরে ছেড়ে বাড়ী। নারীর পরশে জীবনে কারো গহীন অন্ধকার,   চূর্ণ বিচূর্ণ করেছে নারী কত পুরুষের অহঙ্কার। নারীর সামনে নত হয়েছে কত বিশ্বজয়ী বীর। নারীর পরশ পেতে পুরষ কতটা উন্মুখ অধীর। নারী হয়েছে ঘসেঠি বেগম কখনো মাদার তেরেসা নারীর ছোঁয়ায় জীবন্ত পুরুষ পেয়ে সেবা শুশ্রুষা।

অভিশাপ

যদি সহস্র বছর চরণে বসে কাঁদো যদি সমগ্র বসুধা হয় অশ্রুতে নদও তবুও ক্ষমা  নেই তোমার। যদি হাতে দাও পূর্ণিমা শোভিত চাঁদ যদি উচ্চকিত হয় দিগ্বিদিক বজ্রনাদ, তবুও তোমার ক্ষমা নেই প্রিয়তমা। তোমার দুচোখে দেখেছি অামি ছলনা অনুক্ষণ সুরতে দেখেছি আমার সাথে জোচ্চুরির বাঁধ ভাঙ্গা উল্লাসের অনুরণন । যখন আমি হৃদয়ের ব্যথার কাতরে সংজ্ঞাহীন,  গভীর রজনীতে নিদ্রাহীন, তখন তুমি ভেসেছো নিত্য আনন্দের জোয়ারে, নিঃসংশয়ে দ্বিধাহীন । তোমার চিত্তে ছিল ভরা অাষাঢ়ের চির চেনা প্রমত্তা পদ্মা নদী, আমার চিত্তে বইছিল মরু ঝড়ের তান্ডবলীলা নিরবধি। ক্ষমা!ক্ষমা করিব কারে? জেনে শুনে যে দিল প্রশান্ত বারি সম ব্যথা? ক্ষত বিক্ষত হৃদয়ে দিল মোর শোক মর্সিয়ার কাব্যগাথা। ক্ষমা নেই ছলনাময়ীর যে ভাঙ্গে স্বপ্ন মোর, হৃদয়  মন্দিরে কুঠার হানে, মোর দেহে বসে মোরে আঘাতে জর্জরিত করে,হৃদয় খুনের অস্ত্র শানে। ক্ষমায় আমি বড়ই অনুদার, বলতে পারো নিরুপায়, আঘাতে আমি নির্বাক বলে, পারিনে উচ্চারণে ক্ষমায়। দিলুম বিদায় লগ্নে তোমারে অভিশপ্ত জীবনের যন্ত্র‌ণা।  তখন শুধরে কি হবে? কি হবে করে মোর ভূয়সী  বন্দনা। যখন বইতে হবে বিরহ জগত সংসারে অসহ্য

আমার বাবা

'মা' এর মতো ‘বাবা’ও ছোট্ট একটি শব্দ, অথচ গভীরতা অতলান্ত-অসীম। বাবা নিদাঘ সূর্যের তলে সন্তানের অমল-শীতল ছায়া। বাবার তুলনা তিনি নিজেই। বাবা শাশ্বত, চির আপন, চিরন্তন। বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কে মিশে থাকে খানিকটা দূরত্ব, খানিকটা সংকোচ, খানিকটা ভীতি মেশানো শ্রদ্ধা। আবার কীভাবে যেন তাঁর মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায় এক আকাশ নির্ভরতা আর একরাশ নিরাপত্তার অনুভূতি। তিনি ভালোবাসেন ঠিকই, স্নেহও করেন। কোথা থেকে যে বাবার জন্য এত মায়া, এত ভালোবাসা, এত টান তৈরি হয়েছে বুঝতে পারি না। শুধু বুঝি বাবা আমার পরম প্রিয় বন্ধু। আমার অনুপ্রেরণা। আমার আত্মবিশ্বাস। সবকিছু উজাড় করে দেয়ার পরও তাকে কোনোভাবে নিঃস্ব বলে মনে হয় না। মনে হয় তিনি যেন পরম তৃপ্তিতে আরও পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। "মরিয়া বাবর অমর হইয়াছে, নাহি তার কোনো  ক্ষয়, পিতৃস্নেহের কাছে হইয়াছে মরণের পরাজয়। " আজ বয়সের ভারে বাবা খানিকটা দুর্বল। আগের মত শক্তি হাঁটা চলা না থাকলেও সবকিছুই চলে নিয়ম মাফিক। কণ্ঠ স্বর আগের মতোই বুলন্দ ও দরাজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে পড়ার অভ্যাসটা এখনো তার রয়ে গেছে। আমার প্রিয় মানুষটির বয়স এখন আশির  ঘর পেরিয়ে

মুসলিমরা কেন নির্যাতিত ও ইতিহাসের একটি গল্প

গল্পটি বলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। "মঙ্গোল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা চেঙ্গিস খানের নাতি হালাকু খান ইরাকের বাগদাদ শহর দখল করার পর, শহরের শুরু থেকে শেষ আগুন লাগিয়ে দেয়।আমীর আলীর মতে, ‘বাগদাদ আক্রমণে যে ধ্বংসলীলা অনুষ্ঠিত হয় তা থেকে অন্যান্য শহরে কি ঘটেছিল তার আভাস পাওয়া যায়। তিনদিন ধরে শহরের পথে রক্তের স্রোত প্রবাহিত হয়েছিল এবং তাইগ্রিস নদীর পানি মাইলের পর মাইল রক্তে লাল হয়ে উঠেছিল।" ঐতিহাসিকদের কারো কারো মতে প্রায় ৪ লক্ষ মানুষকে হালাকু খান হত্যা করে।ইবনে খলদুনের মতে, মোঙ্গলদের আক্রমণের ফলে ১,৬০,০০০ লোক প্রাণ হারায়, মতান্তরে ২০,০০,০০০ অধিবাসীদের ১৬,০০,০০০ লোক মারা যায়। দজলা ফোরাত নদী রক্তিম বর্ণ ধারণ করে।  শত শত বছরের পরিশ্রমে নির্মিত বাগদাদের মসজিদ,প্রাসাদ, লাইব্রেরী এবং বাসভবনগুলো মাটির সাথে মিশিয়ে দেয় হালাকু খানের সেনাবাহিনী। বাগদাদ ধ্বংসের নিষ্ঠুরতা সম্পর্কে ব্রাউন বলেন, ‘সম্ভবত কখনোই এত বড় ও সমৃদ্ধশালী একটি সভ্যতা এত দ্রুত অগ্নিশিখায় বিধ্বস্ত ও রক্তধারায় নিশ্চিহ্ন হয়নি। এরপর এই জালিম হালাকু খান বাগদাদের সবচেয়ে বড় আলেমের সাথে দেখা করতে চাইলো। কিন্তু, কোনো আলেম-ই হা

এবারের বাজেট এবং শিক্ষা বাজেট

  শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের  সাফল্য ইতিবাচক হলেও শিক্ষার গুণগত মান অর্জনে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে রয়েছে এবং পরিতাপের বিষয় হলো শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ অদ্যবধি নেওয়া হয়নি। প্রতি বছর বাজেট পেশ হয় শিক্ষাখাতে অর্থ ব্যয় হয় কিন্তু প্রত্যাশিত অর্জন এখনো আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।সুশিক্ষিত জাতি তৈরি ও উন্নত রাষ্ট্র বিনির্মাণে শিক্ষা খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন। বর্তমানের বাজেট কতটুকু শিক্ষা সহায়ক তা নিয়ে আজকের আলোচনা। আট বছর আগে ২০১১-১২ অর্থবছরে জাতীয় বাজেট ছিল ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকার। যেখানে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ১২ দশমিক ১১ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেটের শিক্ষা বাজেটে মোট ৮৭ হাজার ৬২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা মোট বাজেট বরাদ্দের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এটা জিডিপির ৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। এটি এখন পর্যন্ত বাজেটে শিক্ষায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ।। যদিও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল জাতীয় বাজেটের ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এদুটো বাজেট বাদে বিগত বছরের অধিকাংশ বাজেট তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গেছে,সব সময়ই শিক্ষা খাতে বরাদ্দ জাতীয় বাজেটের ১০ থেকে ১২ শতা