সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

নাইজেরিয়া

 


 

নাইজেরিয়া পশ্চিম আফ্রিকার একটি রাষ্ট্র। পশ্চিমে বেনিন, পূর্বে চাদ ও ক্যামেরুন, উত্তরে নাইজার এবং দক্ষিণে গিনি উপসাগর অবস্থিত। নাইজেরিয়ার নাম শুনলে প্রথমেই মনে আসে আফ্রিকার বৃহৎ তেল উৎপাদনকারী দেশের কথা। এছাড়া চলচ্চিত্র ও সঙ্গীতের জন্য রয়েছে দেশটির সুনাম। তবে দুর্নীতির জন্যেও দেশটি অনেকের কাছে পরিচিত। তবে এই জানার বাইরেও রয়েছে নাইজেরিয়ার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির দীর্ঘ ইতিহাস।

রাজধানীঃ আবুজা ও সবচেয়ে বড় শহর । শহরটিকে ১৯৮০-র দশকে পরিকল্পিতভাবে উপকূলীয় ঘনবসতিপূর্ণ শহর লেগোসের বিকল্প রাজধানী শহর হিসেবে নির্মাণ করা হয়। ১৯৯১ সালের ১২ই ডিসেম্বর লেগোসের পরিবর্তে আবুজাকে রাজধানীর মর্যাদা দান করা হয়।

আয়তনঃ ৯ লাখ ২৩ হাজার ৭৬৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের

জনসংখ্যাঃ দেশটিতে প্রায় ২০ কোটি মানুষের বসবাস। আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ এটি। জনসংখ্যা ও অর্থনীতির বিচারে নাইজেরিয়াকে আফ্রিকার দৈত্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

জাতিগোষ্ঠীঃহাউসা ২১%, ইউরুবা ২১%, ইবো ১৮% ও ফুলানি ১১%।ছোট-বড় প্রায় ৫০০ টি জাতিগোষ্ঠীর বাস এখানে।

ভাষাঃ নাইজেরিয়ার সরকারি ভাষা ইংরেজি হলেও ইয়োরুবা, ইগবো ও হাউসা ভাষা তিনটি কার্যত আধা-সরকারি ভাষা। এছাড়াও দেশটিতে আরো প্রায় ৪০০ টিরও বেশি স্থানীয় ভাষা ব্যবহৃত হয়।

ধর্মঃ নাইজেরিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ৪৭ শতাংশ মানুষ মুসলিম ,৩৫ শতাংশ খ্রিষ্টান ও ১৮ শতাংশ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করে।

মুদ্রা- নাইরা।

জাতিসংঘের যোগদান : ৭ অক্টোবর ১৯৬০ সাল।

 

নামকরণ

দেশটিতে অবস্থিত নাইজার নদী, যা প্রায় ২৬০০ মাইল জুড়ে বিস্তৃত, পশ্চিম আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম নদী. এই নাইজার নদীর নাম থেকেই দেশটির নাম নাইজেরিয়া দেওয়া হয়েছে। ইউরোপীয় উপনিবেশবাদের পর থেকে তুয়ারেগ শব্দটির পরিবর্তে এই শব্দটির ব্যবহার চালু হয়।

ইতিহাস

১৯১৪ সনে উত্তর ও দক্ষিণ নাইজেরিয়ার ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চল দুটি একত্রিত করা হয়। .১৯৪৭ সনে নাইজেরিয়ার উত্তর নাইজেরিয়া পশ্চিম নাইজেরিয়া এবং পূর্ব নাইজেরিয়া এই তিনটি অঞ্চল নিয়ে বৃটিশ সরকার একটি ফেডারেল কাঠামো তৈরি করেকিন্তু তিনটি অঞ্চলে রাজনৈতিক অগ্রগতি সমান ছিল না বিশেষ করে উত্তরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অঞ্চল শুধু শিক্ষা এবং সংস্কৃতিতে নয় রাজনৈতিক অগ্রগতিতে পূর্ব এবং পশ্চিম অঞ্চলের খ্রিস্টানদের চেয়ে পিছনে ছিল।১৯৬০ সনের পহেলা অক্টোবর নাইজেরিয়া যখন স্বাধীন হয় তখন তার তিনটি অঞ্চলে রাজনৈতিক ও সামাজিক বিবর্তন সমান ছিল না। পশ্চিমাঞ্চলে প্রধান খ্রিস্টানরা অর্থনীতিতে অগ্রসর থাকায় পঞ্চাশের দশকের গোড়াতেই তারা স্বায়ত্তশাসন এবং স্বাধীনতার দাবিদার ছিল।পশ্চিমে ইয়োরুবাদের অ্যাকশন গ্রুপ এবং পূর্ব নাইজেরিয়ায় ইবোদের নাইজেরিয়া নাগরিকদের জাতীয় কনভেনশন স্বাধীনতার প্রশ্নে এজন্য আতঙ্কিত ছিল যে উত্তরাঞ্চলের জনসংখ্যা বেশি থাকায় যে কোনো গণতান্ত্রিক কাঠামোতে উত্তর-দক্ষিণেরউপর প্রাধান্য পাবে। তাছাড়া উত্তরাঞ্চলের মুসলমান আমির সন্তানেরা ব্রিটিশের প্রশ্রয়ে অনেকগুলো অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ করতো বলে তারাও আশা করেছিল যে স্বাধীনতা মানেই গণতন্ত্র এবং তাদের বাড়তি সুবিধা শেষ। তাই তারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল।১৯৫৭ সনেউত্তরের জন্য অপেক্ষা না করে পূর্ব এবং পশ্চিম নাইজেরিয়াকে স্বায়ত্তশাসন দিয়ে একটি ফেডারেশন গঠন করা হয় । তখন হঠাৎ করে উত্তরাঞ্চলীয় চোখ খুলে যায় সুলতানের সংকীর্ণ স্বার্থের জন্য উত্তরাঞ্চলকে দক্ষিণের চেয়ে পরাধীন গোলাম রাখা হয়েছে জনগণ তা বুঝতে পারলে যে কি বিস্ফোরণ ঘটবে তা আন্দাজ করতে পেরে উত্তরাঞ্চলীয় নেতারা স্বাধীনতার দাবি সমর্থন করলেন এবং নাইজেরিয়া কমনওয়েলথের সদস্য হিসেবে স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৬১ সালের জুন মাসে ব্রিটিশ ক্যামেরুনের উত্তরাংশ নাইজেরিয়ার সঙ্গে যোগ দেয়। ১৯৬৭ থেকে ৭০ সাল পর্যন্ত দেশটি গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে। এর পর থেকেই নাইজেরিয়া পর্যায়ক্রমে গণতান্ত্রিক ও সামরিক শাসনের অধীনে ছিল। ১৯৯৯ খ্রীস্টাব্দে এখানে পুনরায় গনতন্ত্র প্রবর্তিত হয়। ২০১১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে দেশটির প্রথম নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।বর্তমানে দেশটি ৩৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় রাজধানী এলাকা নিয়ে গঠিত। ১৯৬০ সালে স্বাধীনতা লাভ করার পর হতে ইতিহাসের প্রথমবারের মত মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার পরিচালনা করছে। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মাদ বুহারির (২৯ মে ২০১৫- বর্তমান)

ইসলামের আগমন

আফ্রিকা বিজয়ী উকবা বিন নাফে (রা.)-এর হাত ধরে এ দেশে ইসলামের প্রভাত রবি উদিত হয়, যা এখন দেশের সর্ববৃহৎ জনগোষ্ঠীর হৃদয়ের স্পন্দন। ষোড়শ শতাব্দীর শেষভাগেই রাজা ইদ্রিস আলোমা (১৫৭২-১৬০৩) এর রাজত্বকালে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। বর্তমানে সেখানে মোট ১৮ কোটি জনসংখ্যার প্রায় শতকরা ৫২ জন মুসলিম। সাব সাহারা আফ্রিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হলো এই নাইজেরিয়া। মুসলিমদের পাশাপাশি শতকরা ৪৬ জন খৃষ্টান এবং বাকি শতকরা ২ জন অন্য ধর্মের অনুসারি। অধিকাংশ মুসলিমরা দেশটির উত্তরাংশে বসবাস করে। অপরদিকে দক্ষিণ অঞ্চলে অধিকাংশ খৃষ্টান অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে বিবেচিত। নৃতাতিক বিবেচনায় দেশটির উত্তরের ’হিউসা’ নৃগোষ্ঠির প্রায় সবাই মুসলিম। আমাদের দেশের মত সেখানকার অধিকাংশ মুসলিম সুন্নি তবে তাদের মধ্যে হানাফি মাযহাবের অনুসারী খুবই কম। অধিকাংস মুসলিমরা মালেকি মাযহাবের অনুসারী। তবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শাফেঈ মাযহাবেরও অনুসরণ করে। মসজিদের নামাজের সময় দুই একজনকে হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী বলে মনে হয়েছে। তবে মাযহাবের ভিন্নতা তাদেরকে একে অপরের শত্রু করে তোলেনি। দেশটির কাদুনা, কানু, কাটসিনা ও সকুটু রাজ্যের কিছু সংখ্যক মসুলিম শিয়া দেখা যায়। শিয়ারা সংখ্যায় প্রায় শতকরা ১২ জন। শিয়া, সুন্নি ও আহমদিয়া মুসলিম জামাতসহ আরো বেশ কিছু বিচিত্র মতবাদ অনুসারীর চিত্র লক্ষ করা যায় মুসলিম অঙ্গনে।ধর্মীয় চর্চার স্বতন্ত্র কোনো শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলন না থাকলেও মিশ্র শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে এর ঘাটতি কিছুটা পূরণ হয়। তবে তাতে ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতির উপস্থিতি খুবই কম। দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কোন্দল, অব্যবস্থাপনা এবং অর্থনৈতিক দুর্বলতাও এর অন্যতম কারণ হতে পারে।

বোকো হারাম-

নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন যারা আল-কায়েদার মতো পশ্চিমা শিক্ষা-সংস্কৃতির বিরুদ্ধে। মোহাম্মদ ইউসুফ ২০০১ সালে বোকো হারাম প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ধর্ম বিষয়ে একজন বিদ্বান ও দক্ষ ব্যক্তি ছিলেন। বোকো হারামের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইউসুফকে ২০০৯ সালে খুন করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের সময় তার সাথে নিহত হয় আরো ৭শ’ অনুসারি। বোরনো প্রদেশের রাজধানী মাইদুগুরির নিকটবর্তী শহর দাম্বোয়ায় বোকো হারাম প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে বোকো হারাম শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে ।আত্মঘাতী বোমা হামলা তাদের প্রধান যুদ্ধপদ্ধতি এবং আল-কায়েদার মতো 'আদর্শ' বাস্তবায়নে চরমপন্থী। জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম নাইজেরিয়ায় শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। লক্ষ্য পূরণে সে দেশের খ্রিস্টান এবং মধ্যপন্থি মুসলমানের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে গোষ্ঠীটি। বোকো শব্দটি হাউসা ভাষার আর হারাম এসেছে আরবি থেকে। বোকো অর্থ পশ্চিমা শিক্ষা। বোকো হারাম মানে পশ্চিমা শিক্ষা পাপ।বোকো হারামের যোদ্ধারা প্রশিক্ষণের জন্য সোমালিয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ আফগানিস্তান পর্যন্ত গেছে বলে মনে করা হয়। দেশটির খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ওপর একের পর এক হামলার জন্য দায়ী। দেশটিতে ২০১২ সালে ৬২০ জন ও ২০১১ সালে ৪৫০ জন নিরীহ মানুষকে হত্যার জন্য জঙ্গি দলটিকে দায়ী করা হয়। বলা হয়, ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বোকো হারাম তিন থেকে ১০ হাজার মানুষ হত্যা করেছে। তাদের সঙ্গে একিউআইএমের সম্পর্ক আছে বলে ধারণা করা হয়। বোকো হারামের সদস্যসংখ্যা চার থেকে ছয় হাজারের মতো। এর মধ্যে অনেক সাবেক সেনাসদস্যও রয়েছে। তাদের আছে সাঁজোয়া যান। এগুলোর মাধ্যমে জঙ্গিরা খুব সহজেই শহর এবং গ্রামে বিচরণ করতে পারে। বোকো হারাম নিজেদের আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএসের সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে তাদের একটি ভিডিও বার্তায় প্রচার করেছে।

অর্থনীতি

অর্থনৈতিকভাবেও দেশটি সমৃদ্ধ। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর দেশটি বিশ্বের ২০তম বৃহত্ অর্থনীতির দেশ। যুক্তরাষ্ট্র এর সর্ববৃহত্ বাণিজ্য অংশীদার। দেশটির রপ্তানির বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রে। সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগও যুক্তরাষ্ট্রেই। নাইজেরিয়া অফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ। যেখানে দেশের অর্থনীতির বেশিরভাগটায় খনিজ তেলের উৎপাদন ও রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে বিশ্বে নাইজেরিয়া ১২ তম খনিজ তেল উৎপাদনকারী দেশ।তাছাড়া দেশটির জনসংখ্যার অধিকাংশ মানুষ চাষাবাদের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া লেদার, টেক্সটাইল, গাড়ি তৈরির কারখানা তথা বিভিন্ন বস্ত্র শিল্পের বাণিজ্যে দেশটির বিরাট অংশের মানুষ যুক্ত আছে। অন্যান্য আফ্রিকান দেশগুলোর তুলনায় অর্থনীতির দিক দিয়ে এতো উন্নত হওয়ার কারণে নাইজেরিয়াকে জায়েন্ট অব আফ্রিকা বলা হয়ে থাকে।

নাইজেরিয়ার ঘন জঙ্গলে পৃথিবীর সব থেকে বেশি পরিমাণ বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতির বসবাস দেখা যায়। দেশটির মানুষ চলচ্চিত্র দেখতে পছন্দ করে। একারণেই হয়তো দেশটি চলচ্চিত্র নির্মাণে বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে নলিউড নামে ডাকা হয়। এটি আফ্রিকার মধ্যে সর্ববৃহৎ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নামে পরিচিত।নাইজেরিয়া বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম গণতন্ত্র। দেশটিতে মানুষের গড় আয়ু মাত্র ৫২ বছর, যা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন। এর কারন অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা, পরিষ্কার পানির অভাব এবং দরিদ্র জীবনযাত্রা। নাইজেরিয়ার মূল ভূখণ্ডের তৃতীয় সেতুটি গোটা আফ্রিকা মহাদেশেরই বৃহত্তম সেতু।ড্রিল বানর নাইজেরিয়ান বংশভূত এবং এটি নাইজেরিয়া ছাড়া কেবলমাত্র আর একটি দেশ ক্যামেরুনে পাওয়া যায়।

নাইজেরিয়াতে সোশ্যাল মিডিয়া খুবই জনপ্রিয় এবং দেশটিতে প্রায় ৩০ লাখেরও অধিক সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছে। নাইজেরিয়াতে অবস্থিত নাইজার বদ্বীপ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বদ্বীপ।গোটা আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে ধনী মানুষের জন্মস্থান কিন্তু এই নাইজেরিয়া। তিনি প্রায় ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের সম্পত্তির মালিক। ঈগল নাইজারিয়ার জাতীয় প্রাণী।অফ্রিকান দেশগুলোর মধ্যে নাইজেরিয়াতেই ফুটবল খেলা অধিক জনপ্রিয়। দেশটির জাতীয় ফুটবল দলকে সুপার ঈগল নামে ডাকা হয়। ইতিমধ্যে নাইজেরিয়া ফুটবল বিশ্বকাপে ছয় বার অংশগ্রহণের সম্মান অর্জন করেছে।

মুহাম্মাদু বাহারি

মুহাম্মাদু বাহারি১৯৪৪ সালে ১৭ ডিসেম্বর জন্ম । নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে উঠে আসা বুহারির নামের সঙ্গে সামরিক শাসকের তকমাও আছে। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত দেশটিতে সামরিক শাসক ছিলেন তিনি। পরে এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান। তবে শেষদিকে এসে নিজেকে 'রূপান্তরিত গণতান্ত্রিক' নেতা বলে দাবি করতে থাকেন তিনি।২০১৯ সালে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন অল প্রগ্রেসিভ কংগ্রেস পার্টির নেতা মুহাম্মাদু বুহারি। বুহারি এক কোটি ৫২ লাখ ভোট পেয়ে প্রয়োজনীয় ৫৬ শতাংশ ভোট নিশ্চিত করেন। নির্বাচনে মোট ভোটের ৫৬ শতাংশ (১৫.২ মিলিয়ন) ভোটই ছিল অল প্রগ্রেসিভ কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বে থাকা মুহাম্মাদু বুহারির পক্ষে।২০১৫ সালে নাইজেরিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) প্রার্থী ও তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গুডলাক জনাথনকে বিপুল ভোটে হারান বুহারি।

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুফফা ইসলামের প্রথম আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো.আবু রায়হান:  সুফফা মসজিদে নববির একটি স্থান। যেখানে একদল নিঃস্ব মুহাজির যারা মদিনায় হিজরত করেন এবং বাসস্থানের অভাবে মসজিদে নববির সেই স্থানে থাকতেন।এটি প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিল এবং রাসুলের আদেশে এটাকে পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দেয়া হয় তখন থেকে এটি পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ নামে। ( A Suffah is a room that is covered with palm branches from date trees, which was established next to Al-Masjid al-Nabawi by Islamic prophet Muhammad during the Medina period.)। মোটকথা রাসুল (সা) মসজিদে-নববির চত্ত্বরের এক পাশে আস সুফফা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুফফা হলো ছাদবিশিষ্ট প্রশস্ত স্থান। সুফফার আকৃতি ছিল অনেকটা মঞ্চের মতো, মূল ভূমির উচ্চতা ছিল প্রায় অর্ধমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এর দৈর্ঘ্য ছিল ১২ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৮ মিটার। মসজিদে নববির উত্তর-পূর্বাংশে নির্মিত সুফফার দক্ষিণ দিকে ছিল রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের অবস্থানের হুজরা এবং সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ছিল মেহরাব।আসহাবে সুফফা অৰ্থ চত্বরবাসী। ঐ সকল মহৎ প্ৰাণ সাহাবি আসহাবে সুফফা নামে পরিচিত, যারা জ্ঞানার্জনের জন্য ভোগবিলাস ত্যা...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

কাবা ঘর নির্মাণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

মো. আবু রায়হানঃ কাবা মুসলমানদের কিবলা, অর্থাৎ যে দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে বা সালাত আদায় করে, পৃথিবীর যে স্থান থেকে কাবা যে দিকে মুসলমানগণ ঠিক সে দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। হজ্জ এবং উমরা পালনের সময় মুসলমানগণ কাবাকে ঘিরে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন।কাবা শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ মুকাআব অর্থ ঘন থেকে।কাবা একটি বড় ঘন আকৃতির ইমারত। (The Kaaba, meaning cube in Arabic, is a square building elegantly draped in a silk and cotton veil.)।যা সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কাবাকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে।কাবার ভৌগোলিক অবস্থান ২১.৪২২৪৯৩৫° উত্তর ৩৯.৮২৬২০১৩° পূর্ব।পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কাবা ঘর ।আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্মিত হয়েছে তা মক্কা নগরীতে। (সুরা আল ইমরান - ৯৬)। “প্রথম মাসজিদ বায়তুল্লাহিল হারাম তারপর বাইতুল মাকদিস, আর এ দুয়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ বছরের”।(মুসলিম- ৫২০)। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি ...