যুগে যুগে ইহুদিদের ষড়যন্ত্র ও অপকর্ম
বিশ্বের বুকে জাতি হিসেবে ইহুদিদের চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ও অপকর্মের ইতিহাস সর্বজনবিদিত। কোরআনে কারিমে তাদের অভিশপ্ত ও লাঞ্ছিত জাতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুদখোর ও ধনলিপ্সু জাতি হিসেবেও তাদের একটা পরিচয় রয়েছে। এ জাতি যুগ যুগ ধরে খোদাদ্রোহিতা, কুফরি ও তাদের খারাপ কর্মকাণ্ডের জন্য মানুষের কাছে অত্যন্ত ঘৃণাভরে পরিচিতি পেয়ে এসেছে। জন্মগতভাবেই এই জাতি খুবই চতুর ও ধুরন্ধর হওয়ায় বিভিন্ন ছলচাতুরী দিয়ে মানুষকে বশীভূত রাখার কৌশল অবলম্বন করে। এর মাধ্যমে তারা অন্যের ওপর দিয়ে যুগে যুগে তাদের নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। ইহুদি কারা? হযরত ইসহাক (আ.)-এর পুত্র হযরত ইয়াকুব (আ.)-এর বংশধররা বনি ইসরাইল নামে পরিচিত। বনি ইসরাইল হচ্ছে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত ইব্রাহিম (আ.)-এর বংশধরদের একটি শাখা। এ শাখারই একটি অংশ পরবর্তীকালে নিজেদের ইহুদি নামে পরিচয় দিতে থাকে। ইয়াকুব (আ)-এর উপাধি ইসরায়েল। এই ইয়াকুব বা ইসরায়েলের ১২ সন্তান। ১২ সন্তানের চতুর্থ জনের নাম ইয়াহুদাহ। ইয়াহুদার অনুসারীরা তাঁর নামানুসারে ইয়াহুদি নামে পরিচিত হয়। সেই নামের অংশবিশেষ থেকে ‘ইহুদি’ নামকরণ করা হয়েছিল। (তাফসিরে মাওয়ারদি - ১/১৩১)। ইহুদিবাদের আদি স্থপতি মুসা বা মোজেস। ইহুদি ধর্মের বয়স প্রায় ৪০০০ বছর ।
পৃথিবীর সব মুফাসসিরিন এবং মুহাদ্দিস একমত যে, ইহুদিরা অভিশপ্ত এবং খ্রিষ্টানরা পথভ্রষ্ট জাতি। একসময় ইহুদি জাতি সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত ছিল। পবিত্র কুরআনে ইহুদিদের সম্পর্কে অনেক স্থানে আলোচনা আছে। তাদের প্রতি মহান আল্লাহ অনুগ্রহ করে অসংখ্য নিয়ামত নাজিল করেছিলেন। কিন্তু তারা সেসব নিয়ামত ভোগ করেও মহান আল্লাহর সাথে বিদ্রোহ করেছে। তাদের সঠিক পথপ্রদর্শনের জন্য আল্লাহ তায়ালা অনেক নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। কিন্তু তারা সেসব নবী-রাসূলের সাথে অমানবিক আচরণ করেছে। মহান আল্লাহ তাদেরকে দু’টি আসমানি কিতাব যবুর ও তাওরাত দিয়ে ধন্য করেছিলেন। কিন্তু তারা এত হতভাগ্য যে, ঐ কিতাবের কোনো নির্দেশ তারা মান্য করেনি। হযরত মূসা (আ.), হযরত দাউদ (আ.) ও হযরত সোলায়মান (আ.)-এর মতো বিশ্ববিখ্যাত নবী তাদের মধ্যে মহান আল্লাহ প্রেরণ করেন। কিন্তু হতভাগ্য ইহুদি জাতি তাদের স্বভাব পরিবর্তন করেনি।
ইহুদি জাতিকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি কষ্টে ভুগেছেন হজরত মুসা (আ.)। কোরআনের বহু জায়গায় এর বিশদ বর্ণনা এসেছে। সুরা বাকারার শুরুর দিকে ইহুদি জাতির ওপর আল্লাহর রহমত এবং প্রায় ১২টি কুকর্ম ও আল্লাহর পক্ষ থেকে এর শাস্তির বিবরণ রয়েছে।আল্লাহ তাদের মিসরের ফেরাউনের হাত থেকে রক্ষা করার পর মুসা (আ.) তুর পাহাড়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওরাত আনার জন্য গেলে তারা গরুর বাছুরের পূজা আরম্ভ করে। আল্লাহ তাদের এর শাস্তি দিয়ে ক্ষমা করার পর আবার তারা বায়না করে বসে আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখার জন্য। এ জন্য তাদের ওপর ফেরেশতার মাধ্যমে তুর পাহাড় উঠিয়ে শাস্তির ভয় দেখানো হয়।মুসা (আ.)-এর দোয়ায় তাদের জন্য কুদরতি খাবার মান্না ও ছালওয়ার ব্যবস্থা করা হলে তারা অকৃতজ্ঞ হয়ে তা খেতে অস্বীকার করে।কখনো তারা মুসা (আ.)-এর ওপর খারাপ অসুস্থতা ও ব্যভিচারের অপবাদ দেয়। এভাবে হজরত মুসা (আ.) আজীবন তাদের নিয়ে কষ্ট করেন।
হজরত দাউদ (আ.) প্রতি শনিবার আল্লাহর কিতাব জবুর পাঠ করতেন, ওই সময় সাগরের মাছও কিনারে এসে তাঁর তেলাওয়াত শুনত। কিন্তু ইহুদিরা ওই সময় মাছগুলো ধরে নিত। আল্লাহর পক্ষ থেকে ওই দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ হলে তারা আল্লাহর বিধানেও তাদের কূটবুদ্ধির অবতারণা করে, তারা শনিবার মাছ ঘেরাও করে রেখে রবিবার তা ধরত। আল্লাহ এর শাস্তিস্বরূপ তাদের একদলকে বানরে পরিণত করেন। তিন দিনের মাথায় ওই বানরের দল সব মারা যায়। (সুরা বাকারা, আয়াত ৪৯-৭৩)
ইহুদি জাতি হজরত সুলাইমান (আ.)-এর ওফাতের পর পারস্পরিক বিভক্তি এবং ধর্মদ্রোহিতা ও কুকর্মের পথ অবলম্বন করে। কোনো কোনো নবী এসে আল্লাহর নির্দেশে ইহুদিদের এ ধরনের কার্যকলাপের শোচনীয় পরিণাম সম্পর্কে সতর্কবাণী শোনালেও তারা তাঁর কথা না মেনে উল্টো নবীর সঙ্গে বিদ্রোহ করে। তখন আল্লাহর গজব হিসেবে তাদের ওপর মিসরের জনৈক সম্রাট চড়াও হয়ে ব্যাপক হত্যা ও লুণ্ঠন চালায়।
ইহুদিরা পবিত্র ও সতী-সাধ্বী নারী হযরত মরিয়ম (সা.)-এর ওপর ব্যভিচারের জঘন্য অপবাদ আরোপ করেছিল। তারা এ অপবাদ রটিয়ে হযরত ঈসা (আ.) কে মরিয়মের ব্যভিচারের ফসল হিসেবে তুলে ধরে এবং এর মাধ্যমে এটা দেখাতে চেয়েছে যে, ঈসা (আ.) নবী বা পথ-প্রদর্শক হওয়ার উপযুক্ত নন। আর এ অপবাদের ভিত্তিতেই ইহুদিরা ঈসা (আ.)-কে রাসূল হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করেছিল। তারা হযরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে এমন জঘন্য অপবাদ প্রচার করেই ক্ষান্ত হয়নি, এমনকি তাঁকে হত্যারও ষড়যন্ত্র করে। ইহুদি ষড়যন্ত্রকারীরা তাঁকে হত্যা করতে পেরেছিল বলেও এক ধরনের ধাঁধা বা ভুল ধারণার শিকার হয়।
হযরত ঈসা (আ.)কে তারা হত্যা করার জন্য চেষ্টা করে, কিন্তু আল্লাহর দয়ায় তিনি বেঁচে যান, তাঁকে তারা হত্যা করতে ব্যর্থ হয়।
এই ইহুদিরা তাদের প্রত্যেক নবীকেই অমানবিক কষ্ট দিয়েছে। হজরত ইলিয়াস (আ.) ইহুদিদের পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। তিনি ইহুদিদের বিরাগভাজন হয়ে নির্যাতনের শিকারই শুধু হননি, তারা তাকে হত্যার জন্যও উদ্ধ্যত হয়। পরিণামে আবার তাদের ওপর মিসরের জনৈক সম্রাট চড়াও হয়ে হত্যা ও লুণ্ঠন চালায়। তারপর অবস্থার কিঞ্চিৎ উন্নতি হয়। অতঃপর আবার অপকর্মে জড়িয়ে পড়লে তাদের ওপর বাবেল সম্রাট বুখতে নসর চড়াও হয়। সম্রাট বায়তুল মাকদিসে আক্রমণ চালিয়ে মসজিদে আকসা ধ্বংস করে দেয়। হত্যাযজ্ঞ ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে শহরটি উজাড় করে দেয়। এরপর ইহুদিরা বায়তুল মাকদিস থেকে নির্বাসিত হয়ে বাবেলে স্থানান্তরিত হয়। সেখানে চরম লাঞ্ছনা ও দুর্গতির মধ্যে ৭০ বছর পার করে। অতঃপর জনৈক ইরান সম্রাট বাবেল দখল করে ইহুদিদের ওপর দয়াপরবশ হয়ে তাদের আবার সিরিয়ায় পৌঁছে দেয়। এ সময় তারা আবার মসজিদে আকসা নির্মাণ করে। অতঃপর ঈসা (আ.)-এর জন্মের ১৭০ বছর আগে আবার তারা পাপে লিপ্ত হলে আন্তাকিয়ার সম্রাট তাদের ওপর চড়াও হয়ে ৪০ হাজার হত্যা করে এবং ৪০ হাজার বন্দি করে। সম্রাট মসজিদে আকসারও অবমাননা করে। এর অনেক বছর পর বায়তুল মাকদিস রোম সম্রাটের দখলে চলে গেলে সে ইহুদিদের সাহায্য করে।
এই ইহুদিরা তাদের সমসাময়িক নবীদের সাথে বারবার বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের ওপর আরোপ করা হলো লাঞ্ছনা ও পরমুখাপেক্ষিতা। তারা আল্লাহর রোষানলে পতিত হয়ে ঘুরতে থাকল। এ জন্য যে তারা আল্লাহর বিধানের সঙ্গে কুফরি করত এবং নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করত। কারণ তারা ছিল নাফরমান ও সীমা লঙ্ঘনকারী।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ৬১)হজরত ইয়াহইয়া (আ.) ইহুদিদের অশ্লীল কার্যকলাপের বিরোধিতা করলে তারা তাঁকে দ্বিখণ্ডিত করে হত্যা করে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, বনি ইসরাইল ৩০০ আল্লাহর নবীকে হত্যা করেছে। (তাফসিরে ইবনে আবি হাতেম ১/১২৬)
রাসুল (সা.) হিজরত করে মদিনায় আগমনের পরপরই স্থানীয়- অস্থানীয় সব গোত্রের সঙ্গে পারস্পরিক সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হন। মদিনার ইহুদিরাও ছিল এ সন্ধিচুক্তির অন্যতম অংশীদার। সন্ধিচুক্তি অনুসারে ইসলাম ও মুসলিম শক্তির বিরুদ্ধে কোনো অন্তর্ঘাত ও নাশকতামূলক কাজে লিপ্ত হওয়া কিংবা ইসলামবৈরী কোনো শক্তির সঙ্গে কোনোরূপ যোগাযোগ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল এবং তা ছিল শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রথম দিকে কিছুদিন ইহুদিরা শান্ত ও নিরপেক্ষ জীবন যাপন করলেও অল্প দিনের ভেতর তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যায় এবং তাদের চিরাচরিত অন্তর্ঘাত ও বিশ্বাসঘাতকতামূলক চরিত্র প্রকাশ পেতে থাকে। তারা একদিকে মদিনার মুনাফিকদের সঙ্গে হাত মেলায়, অপর দিকে মক্কার কাফির কুরাইশদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। অথচ এমনটি হওয়ার কথা ছিল না। আর রাসুল (সা.) এমন ধরনের আশঙ্কা করেননি। কারণ আকিদাগত দিক দিয়ে অর্থাৎ তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতনির্ভর বিশ্বাসের দিক দিয়ে মুসলমানরা ছিল ইহুদিদের নিকটতর। (সিরাতে ইবনে হিশাম : ১/৫১৯) একবার নবী করিম (সা.) কোনো এক কাজে বনু নাজির পল্লীতে গেলে সেখানে তারা ওপর থেকে পাথর নিক্ষেপ করে নবী (সা.)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। রাসুল (সা.) তাদের কুমতলবের কথা অবগত হয়ে তাদের মদিনা থেকে বহিষ্কার করেন। (সিরাত ইবনে হিশাম : ২/১৯০)এরপর খন্দক যুদ্ধের অন্যতম উসকানিদাতা ইহুদি কাব বিন আশরাফকে তার অপকর্মের কঠোর শাস্তি প্রদান করেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস ৪০৩৭) এক সময় রাসুলুল্লাহ (সা) ইহুদিদের মদিনা হতে বহিষ্কার করেন। বহিষ্কৃত অন্য ইহুদিরা খায়বরে মিলিত হয়ে তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখলে মহানবী (সা.) তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন। এখানে তারা সম্মুখযুদ্ধে পরাজিত হয়ে ভক্তের ছদ্মবেশে মহানবী (সা.)-কে দাওয়াত দিয়ে বিষ পান করিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে। রাসুল (সা.) একমাত্র বিষ প্রয়োগকারিণীকেই শাস্তিদান করে গোত্রের অন্যদের ক্ষমা করে দেন। (সিরাত ইবনে হিশাম ২/৩৩৭)পরাজিত ইহুদি গোত্রগুলো রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে উৎপাদিত ফসলের অর্ধেক প্রদানের শর্তে সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। রসূলুল্লাহ (সা:) ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র চক্রান্তের পরিণতিতে রসূলুল্লাহ (সা:)-এর যুগেই তারা মদিনা হতে সম্পূর্ণভাবে বিতাড়িত হয়ে যায়। যদিও ছিটেফোঁটা কিছু ইহুদি বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করছিল, তাদের ব্যাপারে হাদিসে স্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে; ‘আখরিজুল ইহুদা মিন জাযিরাতিল আরব’। অর্থাৎ ‘জাযিরাতুল আরব হতে ইহুদিদের বিতাড়িত করো’।মহানবী (সা.) তাদের সাময়িকভাবে আরব ভূখণ্ডে বসবাস করার অনুমতি দিলেও ইসলামী রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, সংহতি, স্থিতি ও শান্তি সংরক্ষণের স্বার্থে তাদের হাত থেকে জাজিরাতুল আরবকে মুক্ত করার জন্য সাহাবিদের সতর্ক করে যান।
তারা হজরত ওসমান (রা.)-এর বিরুদ্ধে বিষোদগার করে মুসলমানদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করে তাঁকে শহীদ করে। পরবর্তী সময়ে হজরত আলী (রা.)-এর ছত্রচ্ছায়ায় এসে কূটচাল আরম্ভ করে। এর ফলে হজরত আলী (রা.) ও মুয়াবিয়া (রা.)-এর সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে মুসলিম উম্মাহর রক্ত প্রবাহিত করে। পরবর্তী সময় ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হজরত আলী (রা.)-কে শহীদ করে। তাঁর পুত্র হাসান (রা.)-কেও একই ষড়যন্ত্রের জালে শহীদ করে। পরবর্তী সময় কারবালায় হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতও একই সূত্রে গাঁথা। মুসলিম উম্মাহর মধ্যে অনৈক্য-ফেরকাবাজির যে সূত্রপাত অভিশপ্ত ওই ইহুদি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শুরু হয়, আজ পর্যন্ত ওই ফেতনার দ্বার বন্ধ হয়নি।
মদীনা মোনাওয়ারায় রওজা শরীফে দূর থেকে মাটি খুঁড়ে রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর দেহ মোবারক গুম করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল দুই সাধু অপহরণকারী। সুলতান নুরুদ্দীন মাহমুদকে রাসূলুল্লাহ (সা:) স্বপ্ন যোগে এ ষড়যন্ত্রের খবর জানান। তিনি বিচলিত ও বিক্ষুব্ধ হয়ে এক বাহিনীসহ দ্রুত মদীনায় পৌঁছেন এবং ষড়যন্ত্রে লিপ্ত দুই সাধুকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে তাদেরকে হত্যা করে তাদের লাশ আগুনে জ্বালিয়ে দেন। তবে কোনো কোনো বর্ণনায় এ দুই নরাধমকে ইহুদি বলা হলেও বিশ্বস্ত বর্ণনানুযায়ী তারা ছিল স্পেনীয় খ্রিষ্টান, তাদের নাম জানা যায়নি। এটি ছিল হিজরী ৫৫৫ সনের ঘটনা।
ষড়যন্ত্র আর বিশ্বাসঘাতকতায় পরিপূর্ণ ইহুদি জাতির ইতিহাস। তদানীন্তন যুগ থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত সারা বিশ্বে যেখানেই যত বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে, অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, সেসব ঘটনার পেছনে ইহুদিদের কালো হাত সক্রিয় ছিল। এই ইহুদিদের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। আজ থেকে ১৯ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারসহ এক যোগে চালানো চারটি আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয় অন্তত ৩ হাজার মানুষ। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় এ ঘটনা ঘটে।তবে মজার বিষয় কি জানেন, এখনও বিশ্বের অনেক মানুষ মনে করেন, সন্ত্রাসীদের বিমান হামলায় ধ্বংস হয়নি টুইন টাওয়ার। মার্কিন সরকার বা ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা এ হামলার পেছনে ছিল। ওই আক্রমণে কোন ইহুদি মারা যান নি, আসলে কোন বিমান টুইন টাওয়ারে বা পেন্টাগনে আঘাতই করে নি। আরেকটি বড় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হচ্ছে - ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দুটি টাওয়ার ধ্বসে পড়েছিল বিমানের আঘাতে নয়, বরং ভবনটির ভেতরে বিস্ফোরক বসিয়ে তা উড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।৯-১১-এর একটা গোপন স্যাটেলাইট ইমেজ রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে। এমনটাই দাবি রাশিয়ান কূটনীতিকদের। জানা যায়, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে জঙ্গি হামলার এমন এক ছবি তার কাছে রয়েছে যা দিয়ে প্রমাণ করা সম্ভব যে, কাজটা আসলে করিয়েছিল আমেরিকায়। এই ছবি প্রমাণ করবে, বিশ্বের ভয়ঙ্করতম জঙ্গি হামলার দায় আসলে মার্কিন প্রশাসন ও মার্কিন গোয়েন্দাদের। এমনটাই দাবি করে রাশিয়া। আরো দাবি করা হয়, এই হামলার পুরো দায়ভার পড়ে বুশ প্রশাসনের ঘাড়ে। আর এই হামলায় ওসামা বিন লাদেনের লোকজনকে শুধু দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল মাত্র।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন