সুইডেনে কুরআনে অগ্নিসংযোগ ও মতপ্রকাশ
মো. আবু রায়হানঃইউরোপের দেশ সুইডেন। দেশটির আয়তন ৪ লাখ ৫০ হাজার ২৯৫ বর্গকিলোমিটার। মাত্র ৯৫ লক্ষ জনসংখ্যার কারণে সুইডেন ইউরোপের অন্যতম কম জনসংখ্যার ঘনত্বপূর্ণ অঞ্চল। ২০১৬ সালে সুইডেনের মুসলিমদের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ৮ দশমিক ১ শতাংশ। কিন্তু অভিবাসনের উচ্চ হার যদি অব্যাহত থাকে ২০৫০ সাল নাগাদ সুইডেনে মুসলিমরা হবে মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ। সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স এজেন্সির ২০১১ সালের পরিসংখ্যা অনুসারে সুইডেনের মোট জনসংখ্যার সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ মানুষ মুসলিম। অপরদিকে সুইডেনে মুসলমান ও তাদের মসজিদের ওপর হামলার ঘটনা দিন দিন বেড়ে চলছে। প্রতি বছরই আগের বছরের তুলনায় মুসলিমরা বেশি পরিমাণে হামলার শিকার হচ্ছে।যার সর্বশেষ উদাহরণ কুরআনে অগ্নিসংযোগের মতো গুরুতর ঘটনা। শুক্রবার মালামোতে ইসলামবিরোধী অনেক দল কোরআন অবমাননার জন্য সমবেত হয়েছিল। জনসম্মুখে তারা কোরআনের কপিতে পদাঘাত করেছিল।কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে সুইডেনের দক্ষিণাঞ্চল মালমো শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। শহরটিতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ার ঘটনাও ঘটেছে। শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। ইসলাম ধর্মের প্রধান পবিত্র গ্রন্থ কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে মালমো শহরের কয়েকশ’ বিক্ষোভকারী অংশগ্রহণ করেন।মালামোর কোরআন পোড়ানোর স্থানটিতে ক্রমান্বয়ে বিক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যারা কোরআনে পোড়ানোর এই কাজ করেছে, তারা হাস্যকর যুক্তি দিয়ে বলছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য তারা এই কাজ করছে। অথচ সুইডেনের আইন অনুযায়ী এটা বেআইনি, কারণ এর মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষের প্রতি ঘৃণার প্রকাশ ঘটানো হচ্ছে।কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন ‘আর যদি তোমরা প্যাঁচালো কথা বল, অথবা সত্যকে পাশ কাটিয়ে যাও, তবে স্মরণ রেখ; তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত’-(সূরা নিসা আয়াত - ১৩৫)।রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন,‘আমার পরে এমন কতিপয় শাসকের আবির্ভাব হবে, যারা তাদের মিথ্যাচারে সহযোগিতা করবে এবং জুলুম ও স্বৈরাচারে মদদ যোগাবে। তাদের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই এবং আমিও তাদের নই’। (নাসাঈ - অধ্যায়- ব্যবসা-বাণিজ্য)। ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রা) তার খিলাফতের সূচনালগ্নে বক্তব্য দানকালে যথারীতি মতামত প্রকাশের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। আবার ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা:) খেলাফতের আসনে সমাসীন হওয়ার পর সাহাবীরা তার কাছে পত্রের মাধ্যমে মতামত প্রকাশ করতেন। সেখানে মত প্রকাশেের অন্তরায় ভেবে কুরআন পোড়ানোর ঘটনা হাস্যকর ও চরম ইসলাম বিদ্বেষের নামান্তর।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন