সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত স্লোভাকিয়ায় মসজিদ নেই


ইসলামোফোবিয়া ও নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে স্লোভাকিয়ায় মসজিদ নির্মাণ নিষিদ্ধ । Slovakia is where Islam can't as a religion and in this way the Muslims who live in the Country have and practice no strict rights. Muslims who live in Slovakia has no official spot of love as Mosques can't be worked there.মধ্য ইউরোপের স্থলবেষ্টিত প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র স্লোভাকিয়া।দেশটির অফিসিয়াল নাম স্লোভাক রিপাবলিক। স্লোভাকিয়ার উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে চেক প্রজাতন্ত্র। উত্তরে পোল্যান্ড ও পূর্বে ইউক্রেন। দক্ষিণে হাঙ্গেরি ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অস্ট্রিয়া। রাজধানী ও বৃহত্তম শহর ব্রাতিস্লাভা। মধ্য ইউরোপের ৪৯ হাজার বর্গমাইলের দেশ স্লোভাকিয়া। সর্বশেষ ২০১৮ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দেশটিতে প্রায় ৫৪ লাখ মানুষের বাস। ২০১০ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী, দেশটিতে মুসলমানদের সংখ্যা ১০ হাজার ৬০০ জন। জনসংখ্যার আনুমানিক প্রায় ২ শতাংশ। যদিও মুসলমানরা বিশ্বাস করে,বর্তমানে মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় ৫ শতাংশ।ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ স্লোভাকিয়ায় কোন মসজিদ নেই। ৩০ নভেম্বর ২০১৬ সালে স্লোভাকিয়ায় আইন করে অফিসিয়ালি ইসলামকে বাঁধাগ্রস্ত করা হয়েছে। On 30 November 2016, Slovakia passed legislation to effectively block Islam from gaining official status as a religion in the country. Slovakia is the only country within the European Union without any mosque.( Henrich, Alica (2015): Multiculturalism and Religious Tolerance Politics Concerning Muslims in Slovakia. Hamburg.)
স্লোভাকিয়ায় ইসলামের আগমন হয় ১০ শতাব্দীতে। তৎকালীন মধ্য এশিয়ার কিছু গোত্র স্লোভাকিয়ায় গেলে সেখানে ইসলামের যাত্রা শুরু হয়।দ্বিতীয় পর্যায়ে অটোমান তুর্কিরা যখন মধ্য ইউরোপের দিকে অগ্রসর হতে থাকে তখন নতুন করে স্লোভাকিয়ায় ইসলামের যাত্রা শুরু হয়। অটোমানরা কসোভো ও মোহাজ যুদ্ধে বিজয়ী হলে ইসলামের অভিযাত্রা নতুন গতি পায়। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং বোগেনভিলের স্থানীয় কিছু জনগণ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নেয়। স্লোভাকিয়া চেকোস্লোভাকিয়ার অংশ থাকাকালে উসমানিরা বিজয় করেছিল এবং কিছুদিন পর তারা মোরাভিয়ান অঞ্চলের রাজধানী বোর্নো অঞ্চলটিও জয় করে নেন। ফলে তারা সেখানে কিছু মসজিদ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। যদিও তুর্কিরা সেখানে দীর্ঘদিন ছিল না, কিন্তু তাদের এ ভূমিকার কারণে অনেকে ইসলামে দীক্ষিত হয়েছিল।তুর্কিরা ইউরোপের মধ্যাঞ্চল ছেড়ে আসার পর মুসলমানরা সীমাহীন নির্যাতনের শিকার হয়। তাদের মসজিদগুলো সমূলে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। মাদ্রাসাগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে ধর্মীয় সহনশীলতা আইন পাস না হওয়া পর্যন্ত অনেকেই দেশে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রীয় সম্রাট ডিক্রি (ফ্রাঙ্কোস জোসেফ দ্বিতীয়) আইন পাস করেন এবং ইসলামকে একটি দেশীয় ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেন। ফলে তখন মুসলমানরা নতুন করে ধর্ম পালনে সুযোগ-সুবিধা পান। তখন দেশটিতে আবারও মসজিদ মাদ্রাসা নির্মিত হতে থাকে। বেশ কয়েকটি সেবাসংস্থা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি গঠিত হয় চেকোস্লোভাকিয়া ইসলামী ইউনিয়ন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে স্লোভাকিয়ার বার্তা সংস্থা টিএএসআর’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো অভিবাসন নিয়ে বলেন, ‘আমি এখন কিছু বলবো, যা অদ্ভুত শোনাবে। আমি দুঃখিত, তবে স্লোভাকিয়ায় ইসলামের কোনো স্থান নেই।ফিকো বলেন, আর এসব বিষয়ে স্পষ্টভাবে ও প্রকাশ্যে কথা বলা রাজনীতিবিদদের দায়িত্ব। এই দেশে হাজার হাজার মুসলিম না থাকলেই বরং ভালো হবে। তাদেরকে স্লোভাকিয়ায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।তিনি বলেন, ‘মুসলিমরা আসলে দেশের চরিত্র বদলে যাবে। আর আমি দেশের ঐতিহ্য পরিবর্তন করতে চাই না। কারণ এই দেশ কন্সট্যান্টাইন-মেথডিস্ট ঐতিহ্য থেকে সৃষ্টি হয়েছে।প্রধানমন্ত্রীর এই সাক্ষাৎকারের প্রতিক্রিয়ায় স্লোভাকিয়ার ইসলামিক ফাউন্ডেশন এক বিবৃতিতে উল্লেখ করে, ‘প্রধানমন্ত্রীর বারংবার(ইসলামের প্রতি বিরূপ) মন্তব্য শুধু স্লোভাক মুসলিমদেরই ক্ষতি করে না, বরং সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দেশের স্বার্থের জন্যও ক্ষতিকর। কেননা, দেশটি এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে।

গ্রন্থনায়- মো. আবু রায়হান

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে অর্থাৎ ইহুদিদের বন্ধু গাছ

মো.আবু রায়হান:  কিয়ামত সংঘটিত হবার  পূর্বে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে দাজ্জালের জেরুজালেমে যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে ইহুদিরা দাজ্জালের পক্ষাবলম্বন করবে। হযরত ঈসা (আ.) দাজ্জালকে হত্যা করবেন।এদিকে  ইহুদিরা প্রাণ ভয়ে পালাতে চেষ্টা করবে।  আশেপাশের গাছ ও পাথর/ দেয়ালে আশ্রয় নেবে। সেদিন গারকাদ নামক একটি গাছ ইহুদিদের আশ্রয় দেবে। গারকাদ ইহুদীবান্ধব গাছ।গারকাদ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হল কাটাওয়ালা ঝোঁপ।গারকাদ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ Boxthorn। Boxএর অর্থ সবুজ ঝোঁপ এবং thorn এর অর্থ কাঁটা। এ ধরনের গাছ বক্সথর্ন হিসেবেই পরিচিত। এই গাছ চেরি গাছের মতো এবং চেরি ফলের মতো লাল ফলে গাছটি শোভিত থাকে।  ইসরায়েলের সর্বত্র বিশেষত অধিকৃত গাজা ভূখন্ডে গারকাদ গাছ ব্যাপকহারে  দেখতে পাওয়া যায়।ইহুদিরা কোথাও পালাবার স্থান পাবে না। গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে গাছ বলবে, হে মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা কর। পাথর বা দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে পাথর বা দেয়াল বলবে, হে মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা কর। তবে গারকাদ নামক গাছ ইহুদিদেরকে ...

খন্দক যুদ্ধ কারণ ও ফলাফল

#মো. আবু রায়হান ইসলামের যুদ্ধগুলোর মধ্যে খন্দকের যুদ্ধ অন্যতম। ৫ হিজরির শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবীজি (সা.) মদিনায় আসার আগে সেখানে বড় দুটি ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করত। বনু নাজির ও বনু কোরায়জা। ইহুদিদের প্ররোচনায় কুরাইশ ও অন্যান্য গোত্র মদিনার মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। খন্দকের এই যুদ্ধ ছিল মদিনার ওপরে গোটা আরব সম্প্রদায়ের এক সর্বব্যাপী হামলা এবং কষ্টকর অবরোধের এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এসময় ২৭দিন ধরে আরব ও ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে হযরত মুহাম্মদ (স:) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণ কারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কোরায়জা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা, জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।এই যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসল...

উটের যুদ্ধ ইসলামের প্রথম ভাতৃঘাতি যুদ্ধ

#মো.আবু রায়হান উটের যুদ্ধ বা উষ্ট্রের যুদ্ধ বা জামালের যুদ্ধ ( Battle of the Camel) ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে ইরাকের বসরায় সংঘটিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম গৃহযুদ্ধ।এই যুদ্ধ ছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী এর বিরুদ্ধে হযরত তালহা-জুবায়ের ও আয়েশা (রা)সম্মলিত যুদ্ধ। পটভূমি হযরত ওসমান (রা) এর বিভিন্ন প্রদেশে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ নিয়ে একদল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ টেনে বিদ্রোহ শুরু করে।হযরত ওসমান বিভিন্নভাবে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের কথামত মিশরের গভর্নরকে প্রতিস্থাপন করে আবু বকরের ছেলে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর কে নিয়োগ করলেও বিদ্রোহীরা শান্ত হয় নি। তারা নানাভাবে অভিযোগ টেনে এনে ওসমান (রা) এর অপসারণের দাবী করতে থাকে। ওসমান সবকিছু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও তারা ৬৫৬ সালের ১৭ জুন তারা বাড়ি অবরুদ্ধ করে এবং এক পর্যায়ে তারা তার কক্ষে প্রবেশ করে কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় হত্যা করে।ওসমান (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডের পর আলী (রা.) খলিফা হন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে যখনই আলী (রা.) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন তখনই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবের কার...