পোস্টগুলি

এক নব্য ফেরাউনের মৃত্যু

ছবি
মিশরের সামরিক নেতা এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি হোসনি মুবারক টানা তিন দশকের বেশি সময় ধরে মিসর শাসন করে। ১৯৮১ থেকে ২০১১  সাল পর্যন্ত দেশটির রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করে। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি আনোয়ার সাদাত নিহত হবার পর মুবারক মিশরের রাষ্ট্রপতি হয়।গতকাল তার ইহলীলা সাঙ্গ হয়েছে। ২০১১ সালে আরব বসন্তের প্রেক্ষাপটে তিন দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা হোসনি মুবারক ব্যাপক জন বিক্ষোভের মুখে সেনাবাহিনীর দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত হয়। এর দুই মাস পর এপ্রিল মাসে গ্রেপ্তার হয়। ২০১২ সালে যাবজ্জীবন দণ্ড হয় তার।  পরে ২০১৭ সালের মার্চে মুবারক কারাগার থেকে মুক্তি পান। মিসরের স্বৈরশাসক জামাল আব্দুল নাসের, আনোয়ার সাদাত, হোসনী মুবারকের শাসনামলে সাধারণ জনগণ ও ইসলামপন্থীরা জেল জুলুম, গুম, অপহরণ, হত্যা নির্যাতন ফাঁসি ও দেশত্যাগের মতো ঘটনার সম্মুখীন হন। এই সব স্বৈরশাসকদের সময় মিসরের ইসলাম প্রিয় জনগণকে অনেক জেল যুলুম, নির্যাতন, ফাঁসি, গুম সইতে হয়েছে।জয়নব আল গাযালী, হাসান আল বান্না, সাইয়েদ কুতবসহ আরও অসংখ্য ইসলামি স্কলারদের ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হয়েছে।ফেরাউনের মুখোশ মানুষের সামনে উন্মোচন করে দেওয়ার জন্যে আল্লাহ রাব্...

কচুরিপানা তুলকালাম ও বঙ্গ জনপদে কচুরিপানার রাজত্ব

ছবি
 : মো আবু রায়হানঃ সারাদেশে  কচুরিপানা নিয়ে চলছে  ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা। একজন মন্ত্রীর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এই সমালোচনা। যদিও মন্ত্রী তার বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের অভিযোগ করেছেন। দ্রুত বিস্তার করতে পারা এই জলজ উদ্ভিদ নিয়ে রয়েছে নানান মজার ও বিব্রতকর কাহিনী। কচুরিপানা আমাদের দেশীয় কোনো উদ্ভিদ নয়। মনে করা হয় কচুরিপানা অর্কিড-সদৃশ ফুলের সৌন্দর্যপ্রেমিক  ব্রাজিলীয় এক পর্যটক ১৮ শতকের শেষভাগে বাংলায়  নিয়ে আসেন। তারপর কচুরিপানা এতো দ্রুত বাড়তে থাকে যে ১৯২০ সালের মধ্যে বাংলার প্রায় প্রতিটি জলাশয় কচুরিপানায় ভরে যায়। এরপর কচুরিপানা বাংলার প্রবাদ প্রবচন গানেও ঠাঁই করে নেয়। বাঙালি জীবনে কলহ-বিবাদ ও ঝগড়ায় প্রসঙ্গক্রমে এসে যায় কচুরিপানার কথা। প্রতিপক্ষের কথায় আক্রমণাত্মক হয়ে অপরজন বলে উঠে, ‘ভেসে আসা কচুরিপানা পেয়েছিস, ঠেলা দিলেই সরে যাব!গানেও কচুরিপানার দখল লক্ষ্য করা যায়, ‘থাকিলে ডোবাখানা হবে কচুরিপানা...’।  আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে এই কচুরিপানার ভুমিকা ছিল প্রশংসনীয়। আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা  যখন গেরিলা আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিতে খাল বিল...

বাংলা ভাষা আহত না নিহত?

ছবি
আজ সারা বিশ্বে যথাযথ মর্যাদায়  পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। পৃথিবীর একমাত্র জাতি হিসেবে বাঙালিরা তাদের মায়ের ভাষার জন্য ১৯৫২ সালে প্রাণ দিয়েছেন। সেই ভাষার  ওপর ভিত্তি করেই ১৯৭১ সালে ভাষা ভিত্তিক জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে।১৮ দশকের আমেরিকার কবি রাফ এমারসন বলেছিলেন, ‘Language is a city to the building of which every human being brought a stone’। খুবই খাঁটি কথা।বাংলাদেশের বাইরেও বাংলা ভাষার জন্য বাঙালিরাই প্রাণ দিয়েছেন।১৯৬১ সালে আসামের সরকার বাংলাভাষী এলাকা বরাক উপত্যকায় অসমীয়া ভাষাকে আনুষ্ঠানিক ভাষা বলে ঘোষণা করলে দলমত নির্বিশেষে বরাক উপত্যকার জনগণ আন্দোলনে নেমেছিলেন।প্রতিবাদে ১৯৬১ সালের ১৯ মে বরাকে হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেদিন হরতাল চলাকালে আসামের পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মোট ১১ জনকে হত্যা করেছিল। এরপর  আন্দোলনকারীরা দমে না গিয়ে শেষমেশ সেই সরকারি ঘোষণা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছিলেন।এরকম ঘটনা পাকিস্তান আমলে এদেশেও ঘটেছিল। গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তান গণপরিষ...

শুধু কি বাঙালিরাই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে?

ছবি
মো.আবু রায়হান : পৃথিবীতে বাংলাদেশের বাঙালীরাই একমাত্র জাতি নয় যারা আপন মাতৃভাষার জন্য জীবন দিয়েছে এবং বুকের রক্ত ঝরিয়েছে। এমনও জাতি রয়েছে তারাও নিজ ভাষার জন্য জীবন বিলিয়েছে। বাংলাদেশের বাঙালিরা প্রথম ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করছে এটা সত্য। তবে একমাত্র বাংলাদেশের বাঙালিই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে তা সত্য নয়। কেন সত্য নয় তা ইতিহাস ঘাটলে ভাষার জন্য অন্য জাতিগোষ্ঠীর  যারা প্রাণ দিয়েছেন এরকম আরো দু একটি জাতি গোষ্ঠী পাওয়া যায়।   ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বুকে তরুণ তাজা প্রাণের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা জানা থাকলেও ১৯৬১ সালের ১৯ মে ভারতের আসামের বরাক উপত্যকায় তৎকালীন অবিভক্ত কাছাড় জেলার শিলচরে বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য যে ১১ তরুণ বাঙালি আত্মাহুতি দিয়েছিল সে ঘটনার কথা আমাদের অনেকের হয়তো জানা নেই। বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের সেই লড়াইয়ে পুরুষের পাশাপাশি একজন নারীও সেদিন আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। তার নাম কমলা ভট্টাচার্য। ১৬ বছর বয়সী এ তরুণীই হল সমগ্র বাঙালি নারী সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী পৃথিবীর সর্বপ্রথম শহীদ নারী ভাষাসৈনিক। সেদিনের সেই সংগ্রাম, আত্মত্...

জান্নাত একটি কিন্তু দরজা আটটি।

ছবি
জান্নাত একটি কিন্তু তার দরজা আটটি। জান্নাতের আটটি দরজা হলো -জান্নাতুল ফেরদাউস, জান্নাতুন নাঈম, জান্নাতুল মাওয়া, জান্নাতুল আদন, দারুস সালাম, দারুল খুলদ, দারুল মাকাম, দারুল কারার। হযরত সাহল ইবনে সা‘দ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে। এর মধ্যে ‘রাইয়ান’ নামে একটি দরজা রয়েছে। সিয়াম পালনকারীগণ ছাড়া এ দরজা দিয়ে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। (বুখারী ও মুসলিম)। জান্নাতে ১০০টি স্তর আছে আর প্রত্যেক স্তরের মাঝে এত দূর ত্ব আছে যতটা দূরত্ব আছে আকাশ ও জমিনের মাঝে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,“জান্নাতে ১০০টি স্তর আছে। প্রত্যেক স্তরের মাঝে দূরত্ব হল আকাশ ও জমিনের দূরত্বের সমান। আর ফেরদাউস তার মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে আছে। আর সেখান থেকেই জান্নাতের চারটি ঝর্ণা প্রবহমান। এর উপরে রয়েছে আরশ। তোমরা আল্লাহ্‌র নিকট জান্নাতের জন্য দু’আ করলে জান্নাতুল ফেরদাউসের জন্য দু’আ করবে’। (তিরমিযী- কিতাবুল জান্নাহ, সহীহ-আলবা নী, সহীহুত তিরমিযী, হা/২৫৩১)(তাফসীরে মুয়াসসার)

জাহান্নাম সাতটি নয় একটি

ছবি
ছোটবেলা থেকে ভুলভাবে জেনে আসলাম জাহান্নাম সাতটি। কিন্তু এ ধারণা ভুল। জাহান্নাম একটি কিন্তু তার দরজা সাতটি। জাহান্নামের সাতটি দরজার নাম গুলো হলো - ছায়ীর ,লাজা, ছাক্কার,জাহী ম,জাহান্নাম,হাবিয়া, হুতামা। দলীল- আল্লাহ বলেন, “তাদের সবার নির্ধারিত স্থান হচ্ছে জাহান্নাম। এর সাতটি দরজা আছে। প্রত্যেক দরজার জন্যে এক একটি পৃথক দল আছে।” (সূরা হিজর আয়াত - ৪৩, ৪৪) মুফাসসিরগণ বলেন, উপর নিচ করে সাতটি স্তরে জাহান্নামের দরজাগুলো অবস্থিত। ইবলিস শয়তানের অনুসারীরা তাদের আমল অনুযায়ী উক্ত দরজাগুলো দিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

শহিদ জোহা দিবসকে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে চাই

ছবি
  মো.আবু রায়হান : আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি। আজকের এই দিনে স্বৈরাচার আইয়ুব শাহীর সেনার গুলিতে বুক ঝাঁঝরা হয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহা।বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূচনালগ্নে ৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে আত্মদানকারী প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী তিনি। ডাকনাম জোহা, শিক্ষকজীবনেও ছাত্র ছাত্রীর কাছে ছিলেন প্রিয় জোহা স্যার। ড. শামসুজ্জোহা ছিলেন ১৯৪৭ থেকে ১৯৬৯-এরমধ্যে প্রথম শহীদ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করায়  সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমানের বাংলাদেশে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি পাকিস্তানী বাহিনী ছাত্রনেতা আসাদকে হত্যা করে এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিহত হন তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার  ১৭ নম্বর আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হক ‘দেশরক্ষা আইনে’ ছাড়া পেলেও সামরিক আইনের গ্যাঁড়াকলে বন্দি ছিলেন কুর্মিটোলা সেনানিবাসে। সেখানেই ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্মমভাবে নিরাপত্তা প্রহরীর গুলিতে শহীদ হন অভিযুক্ত সার্জ...