ওআইসি গঠন ও পরিচিতি
মো.আবু রায়হানঃইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা সংক্ষেপে ওআইসি একটি আন্তর্জাতিক ইসলামী সংস্থা। জাতিসংঘের পরই দ্বিতীয় বৃহৎ আন্তদেশীয় সংগঠন হচ্ছে ওআইসি। প্রায় ১৮০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে এ সংস্থা।প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইসলামী খেলাফত ব্যবস্থা ভেঙে যায় এবং মুসলিম দেশগুলো সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোর নানা অবিচারের শিকার হয়। যদিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মুসলিম দেশগুলো ধীরে ধীরে স্বাধীন হতে থাকে, তবু খেলাফতব্যবস্থার শূন্যতা ও ঔপনিবেশিক শাসনের ক্ষত রয়ে যায় প্রায় প্রতিটি দেশেই, বিশেষত ইসলামের প্রথম কিবলা ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর স্মৃতিবাহী আল-আকসা মসজিদ এবং ফিলিস্তিন ইস্যু মুসলিম উম্মাহকে দারুণভাবে হতাশ ও মর্মাহত করে।১৯৬৭ সালের ছয়দিনের যুদ্ধের পর ১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট ইসরাইল জেরুজালেমের পবিত্র মসজিদুল আকসায় অগ্নিসংযোগ করে। এর ফলে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।উল্লেখ্য, মক্কা মুয়াজ্জেমায় অবস্থিত বায়তুল্লাহ মুসলমানের কিবলাহ নির্ধারণের আগে মসজিদুল আকসা ছিল মুসলমানদের সর্বপ্রথম কিবলাহ। অগ্নিসংযোগের সময় জেরুজালেমের প্রধান মুফতি ছিলেন আমিন আল হুসাইনি। তিনিই সর্বপ্রথম ঘটনাটি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর গোচরীভূত করেছিলেন। ফলে মসজিদুল আকসায় অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি বিদ্যুৎগতিতে মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় সৌদিআরবের তৎকালীন বাদশাহ ফয়সাল ইবনে আবদুল আজিজ তাৎক্ষণিকভাবে করণীয় কর্তব্য নির্ধারণে বিশ্বের অপরাপর মুসলিম দেশগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের এক জরুরী সম্মেলন আহবানের প্রস্তাব করেছিলেন যাতে মুসলিম উম্মাহর স্পর্শকাতর বিষয়টির ব্যাপারে সমন্বিত উদ্যােগ গ্রহণ করা সম্ভবপর হয়। উক্ত আহবানের প্রেক্ষিতে ২৫ আগস্ট ১৪ টি আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ মিশরের রাজধানী কায়রোতে এক জরুরী বৈঠকে মিলিত হন।মরক্কো, সৌদি আরব, ইরান, পাকিস্তান, সোমালিয়া, মালয়েশিয়া এবং নাইজারকে নিয়ে প্রস্তুতি কমিটি গঠিত হয়। এই বছরে ২২-২৫ সেপ্টেম্বর মরক্কোর রাবাতে ২৫ টি মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের নিয়ে রাবাতে এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এটিই ছিল ওআইসির প্রথম শীর্ষ সম্মেলন। উক্ত সম্মেলনে ২৫ টি মুসলিম রাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণের সিদ্ধান্তক্রমে ইসলামী সম্মেলন সংস্থা নামে এই প্রতিষ্ঠানটি আত্মপ্রকাশ করে। একই দিন তাঁরা ওআইসি চার্টার স্বাক্ষর করেন। A resolution was passed stating that,"Muslim government would consult with a view to promoting among themselves close cooperation and mutual assistance in the economic, scientific, cultural and spiritual fields, inspired by the immortal teachings of Islam." ওআইসির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ৭ টি-
১। সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে ইসলামী সংহতি বৃদ্ধি করা।
২। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রসমূহে সদস্যরাষ্ট্রসমূহের মধ্যে সহযোগিতা সংহত করা এবংআন্তর্জাতিক ফোরামসমূহে নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করা।
৩। বর্ণ বৈষম্যের মূলোচ্ছেদ এবং উপনিবেশবাদ বিলোপের চেষ্টা অব্যহত রাখা।
৪। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি প্রয়োজনীয় সমর্থন প্রদান করা।
৫। পবিত্র স্থান সমূহের নিরাপত্তা বিধানের সংগ্রামকে সমন্বিত এবং সুসংহত করা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য সংগ্রামকে সমর্থন করা এবং তাদের অধিকার আদায় এবং স্বদেশ রক্ষা করার কাজে সাহায্য প্রদান।
৬। মুসলমানদের মান মর্যাদা, স্বাধীনতা এবং জাতীয় অধিকার সংরক্ষণের সকল সংগ্রামে মুসলিম জনগণকে শক্তি যোগানো।
৭। সদস্য রাষ্ট্রসমূহ এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে সহযোগীতা এবং সমঝোতা বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা।
শুরুতে ওআইসির সদস্য সংখ্যা ছিল ২৫।দুই ইয়েমেন এক্ত্রিত হওয়ায় পরবর্তিতে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দেশ সংখ্যা ২৪ ।ওআইসির রূপরেখা চূড়ান্ত করতে ১৯৭০ সালের মার্চে সৌদি আরবের জেদ্দায় মুসলিম বিশ্বের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিলিত হন। ১৯৭২ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ওআইসি। ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত ওআইসির তৃতীয় শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য পদ লাভ করে বাংলাদেশ। একাধিক প্রতিবেশী দেশের পরামর্শ উপেক্ষা করে এই সম্মেলনে যোগ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।পর্যবেক্ষক হিসেবে ওআইসির সঙ্গে যুক্ত আছে পাঁচটি দেশ। এবং সাতটি সংগঠন ও সংস্থা।জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধিত্বমূলক সংস্থা হিসেবে ওআইসির একটি জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি দল রয়েছে।হিসেবে ওআইসির সঙ্গে যুক্ত পাঁচটি পর্যবেক্ষক দেশ- বসনিয়া হার্জেগোভিনা (১৯৯৪),মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র (১৯৯৬), থাইল্যান্ড (১৯৯৮),রাশিয়া (২০০৫), তুর্কি সাইপ্রাস (১৯৭৯)।
মুসলিম সংগঠন-
১.মরো ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট ফিলিপাইন (১৯৭৭)
Islamic Institutions
1. Parliamentary Union of the OIC Member States - PUOICM (2000)
International Organizations
1. United Nations (UN) (1976)
2. Non-Aligned Movement (NAM) (1977)
3. League of Arab States (LAS) (1975)
4. African Union (AU) (1977)
5. Economic Cooperation Organization (ECO) (1995)
মূল সংগঠনের বাইরে ওআইসির ছয়টি সহযোগী, ১৮টি অধিভুক্ত, সাতটি বিশেষায়িত সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান এবং চারটি স্ট্যান্ডিং কমিটি রয়েছে। এ ছাড়া ওআইসি চারটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ছয়টি আঞ্চলিক অফিস পরিচালনা করে। সৌদি আরবের জেদ্দায় সংগঠনটির প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর পশ্চিম আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এবং ভারতীয় উপমহাদেশের বাংলাদেশ-পাকিস্তানসহ মোট সদস্য দেশের সংখ্যা ৫৭। জিবুতি, মিশর, গ্যাবন, গাম্বিয়া, গিনি গিনি-বিসাউ, আইভরিকোস্ট, লিবিয়া, মালি, মরিতানিয়া ,মরোক্কো, মোজাম্বিক, নাইজার, নাইজেরিয়া, সিয়েরালিওন, সোমালিয়া, সুদান, টোগো, তিউনিসিয়া, উগান্ডা ,আফগানিস্তান, আজারবাইজান, বাহরাইন, বাংলাদেশ, ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, জর্ডান, কাজাখস্তান, কুয়েত, কিরগিজস্তান, লেবানন, মালয়েশিয়া, সৌদিআরব,ফিলিস্তিন,পাকিস্তান,তুরস্ক ,তুর্কমেনিস্তান ,সংযুক্ত আরব আমিরাত , উজবেকিস্তান, ইয়েমেন আলবেনিয়া ,গায়ানা ও সুরিনাম ও আইসির সদস্য ।৫৭টি দেশের মধ্যে ৫৬টি জাতিসংঘের সদস্য।অমুসলিম রাষ্ট্র হয়েও OIC এর সদস্য-উগান্ডা, ক্যামেরুন, বেনিন ও সুরিনাম। OIC এর সর্বশেষ সদস্য- আইভোরিকোস্ট (২০০১)।এই সংস্থা মূলতঃ মুসলমানদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রতিনিধিত্ব করে থাকে।ওআইসির সরকারি ভাষা তিনটি আরবি, ইংরেজি, এবং ফরাসি। ওআইসি চার্টার অনুসারে সংগঠনটি ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষায় সারাবিশ্বে কাজ করছে । ওআইসির লক্ষ্য ছিল এরকম : It is the collective voice of the Muslim World and works to safeguard and protect the interests of the Muslim World in the spirit of promotion international peace and harmony (আন্তর্জাতিক শান্তি ও সৌহার্দ্যকে সমুন্নত করার ব্রতকে বক্ষে ধারণ করে মুসলিম বিশ্বের স্বার্থ রক্ষার্থে সংস্থাটি সমস্বরে কথা বলবে, মানে কাজ করবে)। মহাসচিবই ওআইসির নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী। ওআইসির প্রথম মহাসচিব ছিলেন মালয়েশিয়ার টুংকু আবদুর রহমান এবং বর্তমান (১১তম) মহাসচিব সৌদি আরবের ড. ইউসুফ বিন আহমদ আল উসাইমিন। সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মহাসচিব নির্বাচনে ভোট দেন। একজন ব্যক্তি পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য সর্বোচ্চ দুইবার মহাসচিব হতে পারেন।মুসলিম রাষ্ট্রনেতাদের শীর্ষ সম্মেলন ওআইসির প্রধান কার্যক্রম। তিন বছর পরপর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিশেষ প্রয়োজনেও মহাসচিব ওআইসির শীর্ষ সম্মেলন আহ্বান করতে পারেন। এ পর্যন্ত ১৪টি সাধারণ এবং সাতটি বিশেষ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৬৯ সালে মরোক্কোর রাবাতে ওআইসির প্রথম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ওআইসির ১৪ তম শীর্ষ সম্মেলন ৩১ মে এবং ১ জুন ২০১৯ তারিখে সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরীতে অনুষ্ঠিত হয়। এর বাইরে সদস্য দেশগুলোর মন্ত্রী পর্যায়েও একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেমন—পররাষ্ট্র, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, শ্রম, নারী ইত্যাদি বিষয়ক মন্ত্রীরা পারস্পরিক সহযোগিতা ও উন্নয়নচিন্তা থেকে বৈঠক করেন। ১৯৯০ সালের ৫ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক শেষে ইসলামে মানবাধিকারবিষয়ক কায়রো ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষার পাশাপাশি গঠনমূলক মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সুশাসন ও সুষম উন্নয়নের অঙ্গীকার করা হয়।বিশ্লেষকদের দাবি, এই ঘোষণাও বাস্তবায়িত হয়নি ওআইসির বেশির ভাগ দেশে। মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বেশির ভাগ সদস্য দেশেই রাজনৈতিক অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছে। তাই বলা যায়, ওআইসির সম্মেলন ও অঙ্গীকার ঘোষণাসর্বস্ব বিষয়ে পরিণত হচ্ছে দিন দিন।
ওআইসির Organisation of the Islamic Conference এর নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালে Organisation of the Islamic Countries করা হয় । ২০১১ সালের ২৮ জুন আস্তানা, কাজাখস্তানে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলে প্রতিষ্ঠানটির নাম ইসলামী সম্মেলন সংস্থা: Organisation of the Islamic Countries পরিবর্তন করে Organisation of Islamic Cooperation বা ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা করা হয়।তবে ওআইসি নাম ঠিক থাকে।এই সময়ে ওআইসির লোগোও পরিবর্তন করা হয়।
ওআইসির সহায়ক সংস্থা-
১. পরিসংখ্যান, অর্থনৈতিক ও সামাজিক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (The Statistical, Economic and Social Research and Training Centre for Islamic Countries) তুরস্ক, আঙ্কারা
২.ইসলামিক ইতিহাস, শিল্প ও সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র (আইআরসিআইসিএ) The Research Centre for Islamic History, Art and Culture (IRCICA), তুরস্ক, ইস্তাম্বুল
৩.ইসলামী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (The Islamic University of Technology )বাংলাদেশ , ঢাকা
৪.ইসলামিক সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অফ ট্রেড, (The Islamic Centre for the Development of Trade) মরক্কো,ক্যাসাব্লাঙ্কা
৫.ইসলামিক ফিকহ একাডেমি (The Islamic Fiqh Academy) সৌদি আরব, জেদ্দায়
৬.ইসলামেট ইসলামিক নেটওয়ার্ক (The Islamsate Islamic Network) সৌদি আরব, রিয়াদ
৭ .ইসলামী সংহতি তহবিলের নির্বাহী ব্যুরো এবং এর ওয়াকফ (The Executive Bureau of the Islamic Solidarity Fund and its Waqf) সৌদি আরব জেদ্দা
৮.ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় (The Islamic University ) নাইজার
৯ .ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (The Islamic University), উগান্ডার এমবালা
১০ .তাবারিজ ইসলামিক আর্ট বিশ্ববিদ্যালয়, (The Tabriz Islamic Arts University) ইরানের তাবরিজে অবস্থিত।
ওআইসির অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান -
Islamabad Chamber of Commerce & Industry (ICCI), located in Karachi, Pakistan.
World Islamic Economic Forum (WIEF), located in Kuala Lumpur, Malaysia.
Organisation of Islamic Capitals and Cities (OICC), located in Jeddah, Saudi Arabia.
Sports Federation of Islamic Solidarity Games, located in Riyadh, Saudi Arabia.
Islamic Committee of the International Crescent (ICIC), located in Benghazi, Libya.
Islamic Shipowners Association (ISA), located in Jeddah, Saudi Arabia.
World Federation of International Arab-Islamic Schools, located in Jeddah, Saudi Arabia.
International Association of Islamic Banks (IAIB), located in Jeddah, Saudi Arabia.
Islamic Conference Youth Forum for Dialogue and Cooperation (ICYF-DC), located in Istanbul, Turkey.
General Council for Islamic Banks and Financial Institutions (CIBAFI), located in Manama, Bahrain.
Standards and Metrology Institute for Islamic Countries (SMIIC), located in Istanbul, Turkey.
ওআইসির বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট -
The Islamic Educational, Scientific and Cultural Organisation (ISESCO), located in Rabat, Morocco.
The Islamic States Broadcasting Organisation (ISBO) and the International Islamic News Agency (IINA), located in Jeddah, Saudi Arabia
১৯৬৯-এ ইসরায়েলের হাত থেকে আল-আকসা মসজিদের নিরাপত্তাকে উপলক্ষ করেই ওআইসির জন্ম। অথচ এখন অনেক ওআইসিভুক্ত দেশ ইসরায়েলের মিত্র। ইসরায়েলকে একঘরে করার পরিবর্তে ওআইসি এখন বিশ্ব পরিসরে অনেকখানি তাৎপর্যহীন সংস্থায় পরিণত হয়ে গেছে। গাজা অবরোধে ইসরায়েলের অন্যতম সহযোগী মিসর।যে রাজনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে ওআইসির প্রতিষ্ঠা, সে ক্ষেত্রে, এমনকি মুসলিম বিশ্বের কোনো রাজনৈতিক সংকটে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না ওআইসি। যেসব সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রভাব খাটিয়ে বিশ্বরাজনীতিতে মুসলিম প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছিল সংগঠনটি, আজ ওআইসির নেতৃত্বদানকারী দেশগুলোর বড় অংশই সেসব দেশের পদলেহনে ব্যস্ত। বিশ্বরাজনীতিতে মুসলিম স্বার্থ সুরক্ষার প্রশ্নেও তাদের ভূমিকা রহস্যজনক। ধনী ও নেতৃস্থানীয় আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠতা মুসলিম উম্মাহকে নতুন উদ্বেগের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। মুসলিম দেশগুলো আজ যুদ্ধ, সংঘাত, হানাহানি এবং মারামারিতে বিপর্যস্ত। মুসলিম বিশ্বের সর্বত্রই হতাশা, দুর্দশা। সৌদি আরব এবং ইরান মুসলিম বিশ্বের দুটি প্রভাবশালী দেশ। অথচ দেশ দুটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বৈরিতা চলছে এবং বর্তমানে দেশ দুটির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কও বিচ্ছিন্ন। আর এই বৈরিতার কারণে মুসলিম বিশ্ব বছরের পর বছর ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ দ্বন্দ্বের কারণে ওআইসি কখনো গঠনমূলক কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন